ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঢাকা-ঝিনাইদহ এসি বাসে ভাড়া লাগামছাড়া

ঝিনাইদহের চোখঃ

এমনিতেই জ্যৈষ্ঠের খরতাপ, তার উপর ঈদে বাড়তি চাপ। সড়ক পথে ঈদ যাত্রায় তাই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বা এসি বাস যাত্রীদের প্রথম পছন্দ। এই সুযোগে এসি বাসের ভাড়া স্বাভাবিকের তুলনায় দেড় গুণ, কোথাও কোথাও দ্বিগুন নেওয়া হচ্ছে। এ যেন সুযোগ বুঝে কোপ মারার মত অবস্থা।

এসি বাসে সরকার নির্ধারিত কোনো ভাড়া না থাকায় মালিকেরা ইচ্ছামত ভাড়া নির্ধারণ করে রেখেছে। ঈদকে কেন্দ্র করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বা এসি বাসের ভাড়া লাগামছাড়া।

শুক্রবার (৩১ মে) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এসব চিত্র দেখা যায়।

ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ রোডে চলাচলকারি জে আর পরিবহনে এসি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১৩শ টাকা। অন্যসময় যা ছিল ৮শ টাকা। ঢাকা থেকে ফরিদপুরে গোল্ডেন পরিবহনের এসি বাসের ভাড়া ৭শ টাকা। আগে যা ছিল ৪শ টাকা। ঢাকা থেকে যশোরে একে ট্রাভেলসের এসি গাড়ীতে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ১৮শ টাকা। যা আগে ছিল ১২শ টাকা।
বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে পরিবহন কোম্পানির কর্মীরা বলছেন, এসি গাড়ীর তেল খরচ ডাবল লাগে। যাওয়ার সময় গাড়ি ভর্তি যাত্রী থাকলেও ফিরতে হচ্ছে খারি। এ কারণে ভাড়া একটু বেশি।

এসি গাড়ীর ভাড়া নির্ধারনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)র চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান সারাবাংলাকে বলেন, এসি গাড়ীর ভাড়া আমরা নির্ধারণ করি নি। এসি গাড়ীর মালিকরা তাদের গাড়ীর মান অনুসারে ভাড়া নির্ধারণ করে থাকেন। চাহিদা বাড়লে ভাড়া বাড়ান, আবার চাহিদা কম থাকলে ভাড়াও কমে।

এসি গাড়ীর ভাড়া নির্ধারনে সরকারের কি কিছুই করার নাই জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিমানের ভাড়া যেমন নির্ধারিত নাই। তেমনি এসি গাড়ীর ভাড়াও নির্ধারিত নাই। এটা গাড়ীর মালিকেরা ঠিক করে থাকেন।

এসি গাড়ীর ভাড়ার নৈরাজ্য নিয়ে যদি অভিযোগ আসে সে ক্ষেত্রে এটি আইনের আওতায় আনার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

বাংলাদেশে এসি বাসের যাত্রা থেকেই এর ভাড়া মালিকেরা নির্ধারণ করে থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসি বাদে অন্য যে কোনো গাড়ীর ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ এলে এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

অন্যদিকে, বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ সারাবাংলাকে বলেন, একটি এসি গাড়ী যাত্রী ভরে গেলেও ফেরার সময় খালি ফিরতে হয়। তাছাড়া একটা এসি গাড়ীর দ্বিগুন জালানী খরচ হয়।

তিনি বলেন, এসি গাড়ীতে তেমন লাভ নেই। এ কারণে গত ২০ বছরে কয়টি এসি গাড়ী বেড়েছে। গাবতলী টার্মিনালে সর্বোচ্চ ১শ এসি গাড়ী আছে। প্রত্যেকটা এসি গাড়ী খালি ফিরতে হয়। নন এসি তেমনটা খালি আসে না বলেও তিনি জানান।

এসি গাড়ীর ভাড়া নির্ধারণ করা নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। বাসের মালিকরা এটি নির্ধারণ করে থাকেন। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এসি গাড়ী একেকটা এক এক রেঞ্জের হয়ে থাকে। গ্রিনলাইন গাড়ী স্লীপার কোচ করেছে, যেখানে যাত্রীরা শুয়ে শুয়ে যাবে। এ গাড়ীর ভাড়া কি অন্য গাড়ীর সমান হবে। কোনো কোনো গাড়ী আছে ৩২ সিটের, কোনটা আছে ৪২ সিটের। এ কারণে এসি গাড়ীর ভাড়া মালিকেরা নির্ধারণ করে থাকে। গাড়ী অনুযায়ী একই লাইনের হলেও ভাড়া ভিন্ন ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সড়ক, পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে অবশ্যই বিআরটিএর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। এখানে মালিক ও শ্রমিক নেতারা আছেন। তাদের বিশেষভাবে অনুরোধ করব, এসি টিকিটের ভাড়া যেন রিজেনেবল থাকে। এভাবে ফ্রি স্টাইলে ভাড়া যাতে ভাড়া আদায় না হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button