জানা-অজানাদেখা-অদেখাহরিনাকুন্ডু

ঝিনাইদহে স্বামীকে কিডনি দিয়ে বিরল দৃষ্টান্ত সৃষ্টি স্ত্রী মমতাজের

ঝিনাইদহের চোখ-
ভালোবাসা অমর। যুগে যুগে এ কথাটিই প্রমানিত হয়ে আসছে। ভালবাসার নিদর্শন স্বরুপ স¤্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজের জন্য গড়েছেন তাজমহল। এমনই এক ভালবাসার নিদর্শন দেখালেন ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার হরিশপুর গ্রামের গৃহবধু সেতু খাতুন। বিয়ের পর স্বামীকে ভালোবেসে কথা দিয়েছিলেন বাঁচলে একসাথে বাঁচব, মরলে একসাথে মরব। তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। মৃত্যু পথযাত্রী স্বামীকে একটি কিডনি দিয়েছেন তিনি। বর্তমানে তারা ঢাকার শ্যামলী সিকেডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

গ্রামবাসি জানান, হরিশপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে আনসার সদস্য রাশিদুল ইসলাম ৩ মাস আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হলে তার কিডনি সমস্যা ধরা পরে। পরে খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে পরীক্ষার পর তার ২ টি কিডনি বিকল হয়ে পড়ে বলে চিকিৎসকরা জানায়।

মধ্যবিত্র পরিবার কিডনি কিনে তা প্রতিস্থাপন করতে প্রয়োজন লাখ লাখ টাকা। যা কখনো রাশিদুলেল পরিবারের পক্ষে জোগানো সম্ভব নয়। ফলে হতাশায় পড়েন তার পরিবার। ভাগ্যক্রমে রাশিদুলের সঙ্গে তার স্ত্রীর কিডনি মিলে যায়। ভালোবাসার মানুষটিকে বাঁচাতে কিডনি দিতে রাজী হন স্ত্রী সেতু খাতুন। গত ১২ নভেম্বর রাজধানীর শ্যামলী ৩ নং সড়কের সিকেডি কিডনি হাসপাতালে তাদের অপারেশন করা হয়। ওই দিন বিকাল ৪ টার দিকে অপারেশন শুরু হয়।

বর্তমানে স্বামী ও স্ত্রী দুই জনই সুস্থ আছেন। মোবাইলে স্ত্রী সেতু খাতুনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, পরিবার থেকে বিয়ে দিয়েছেন। আমি স্বামীকে জীবনের চেয়ে বেশি ভালবাসি। আমাদের ঘরে ২ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। তার মুখের দিকে চেয়ে আমি রাশিদুলকে কিডনি দিয়েছি।

আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন। জানা গেছে, সাড়ে ৩ বছর আগে পারিবারিক ভাবে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার হরিশপুর গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে রাশিদুরের সাথে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাতিভাঙ্গা গ্রামের হবিরর রহমানের মেয়ে সেতু খাতুনের বিয়ে হয়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button