জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখামহেশপুর

তুরস্কের দুম্বার ব্যতিক্রমী খামার ঝিনাইদহে

ঝিনাইদহ চোখ-

ঝিনাইদহে প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দুম্বা পালন করে সাড়া ফেলেছেন কবির কাজী। অজপাড়াগাঁয়ে মরুঅঞ্চলের এ প্রাণীর খামার সাড়া ফেলেছে পুরো জেলা জুড়ে। নতুন ও ভিন্নধর্মী পশুর এ খামার দেখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ ছুটে আসছেন। ইতিমধ্যেই ২টি দুম্বার দাম উঠেছে ৩ লাখ টাকা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দুরত্বে মহেশপুর উপজেলার অজপাড়াগাঁ আলামপুর গ্রামের কবির কাজীর ব্যতিক্রমী দুম্বার খামার। দেশি জাতের ছাগলের সাথে পালন করছেন মরুর দেশের দুম্বা। ছোটবড় দিয়ে মোট ১৪টি দুম্বা পালন করছেন ওই খামারে। খোলা মাঠের ঘাস খেতে দেখা যায় দুম্বা গুলোর। এছাড়াও কাঁচা ঘাস, ভূসি ও খইলও খায় খামারে। ছাগল এবং দুম্বাগুলো দেখাশোনার জন্য খামারে চারজন লোক মাসিক বেতনে কাজও করছেন। মরুর দুম্বাগুলো একনজর দেখার জন্য দূরদুরান্ত থেকে ছুটে আসছে দর্শণার্থীরা।

খামারের মালিক মোঃ কবির কাজী জানান, মাত্র ১১ মাস আগে ইন্টারনেটে দুম্বা বিক্রয়ের বিজ্ঞাপন দেখতে পান। সখ মেটাতে প্রবাসী ছেলে ৮টি তুরস্ক জাতের দুম্বা সিলেট থেকে ১০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করে দেন। ৬ মাস যেতে না যেতেই বাচ্চা দেওয়া শুরু করে দুম্বা গুলো। এখন খামারে ১৪টি দুম্বা রয়েছে।

তিনি আরো জানান, মরুর প্রাণী যে আমাদের দেশের আবহাওয়া সাথে মানিয়ে নিতে পারবে কখনো ভাবেনি। দুম্বার পাশাপাশি খামারে রয়েছে দেশীয় ও উন্নত জাতের ছাগল। সখের খামার এখন বাণীজ্যিক ভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। খামার থেকে তেমন লাভবান না হলেও ছাগল ও দুম্বার পাশাপাশি গরুর খামারও করার ইচ্ছা রয়েছে তার। তিনি মনে করেন খামারটিতে বাণিজ্যিকভাবে দুম্বা পালন করতে পারলে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

আরো জানান, দুম্বা গুলোর খাবারের তালিকায় রয়েছে ভুসি ও কাঁচা ঘাস। রোগবালাই নেই বললেই চলে। আকার ভেদে বিক্রি হয় ৬০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। দুম্বার পাশাপাশি ২৭টি দেশি জাতের ছাগলও পালন করেন। প্রতিদিন শ্রমিক, পশু খাদ্য দিয়ে তার ব্যয় ৩ হাজার টাকা। বর্তমানে ৪ জন শ্রমিক কাজ করে খামারে।

গ্রামের সাধারণ কৃষক ও দর্শণার্থীরা জানান, সচরাচর কেউ দুম্বা পালন করেন না। সখ মেটাতে টাকার পরিমাণ বেশি হলেও ভিন্নধর্মী পশু পালন করছেন। তবে কবির কাজীর দেশি জাতের ছাগলের সাথে ভিন্নধর্মী পশু (দুম্বা) পালন দেখে তারাও উৎসাহিত হচ্ছেন দুম্বা পালনে।

ঝিনাইদহ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. মনোজিৎ কুমার সরকার বলেন, জেলায় তিনিই প্রথম দুম্বা খামারী। বিশ্বব্যাপী দুম্বার মাংস ও চামড়ার চাহিদা রয়েছে ব্যাপক, যার ফলে দুম্বার দামও অনেক বেশি। দুম্বা ক্রয়ে অনেক ব্যায়বহুল এবং দুর্লভ হওয়ায় সাধারণ কৃষকেরা দুম্বার চাষ করতে পারেন না। তবে নতুন আগ্রহী খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দেন তিনি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button