জানা-অজানা

তরমুজ কেন খাবেন?

ঝিনাইদহের চোখঃ

বাইরে সবুজ, ভেতরে টকটকে লাল। ডিম্বাকার এই ফলটির দেখা মেলে গ্রীষ্মে। বলছি তরমুজের কথা। গরমে আমাদের ক্লান্তি কাটাতে তরমুজের বিকল্প নেই। তরমুজের রসে ভিটামিন এ, সি, বি২, বি৬, ই এবং ভিটামিন সি, ছাড়াও পটাশিোম, ম্যাগনেশিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, ইত্যাদি থাকলেও, ক্যালোরির মাত্রা কম। ফলে তরমুজ থেকে ওজন বেড়ে যাওয়ার চিন্তা নেই। তরমুজে রয়েছে লাইকোপিন নামে এক ধরনের লাল উপাদান। ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ধরে রাখত যেমন ভিটামিন এ-র ভূমিকা অনন্য, তেমনই লাইকোপিন আপনার হাড়ের বয়স রুখবে।

ঋতু পরিবর্তনের সময় সর্দি-জ্বরে কাবু হন অনেকেই। ডায়েটে তরমুজ তাদের বাড়তি শক্তি জোগাবে। কারণ তরমুজের মূল উপাদান ভিটামিন সি। ১০০ গ্রাম তরমুজে ৮.১ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি রয়েছে। তা ছাড়া তরমুজে প্রায় ৯৪ শতাংশ পানি থাকে যা শরীরের পানির ঘাটতিও দূর করে।

তবে এ সব সাধারণ গুণের ফিরিস্তিকে পিছনে ফেলে দিয়েছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্রুট অ্যান্ড ভেজিটেবল ইমপ্রুভমেন্ট সেন্টারের অধিকর্তা ভিনু পটেল ও তার সহযোগীরা মিলে দীর্ঘ দিন গবেষণা চালিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে।

সেই গবেষণা থেকেই উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। তরমুজ সিট্রুলিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিডের স্বাভাবিক উৎস। এই সিট্রুলিনের মধ্যেই রয়েছে বিশেষ ক্ষমতা, যা রক্ত সঞ্চালনের ক্ষমতা বাড়ায়। রক্তনালীর কর্মক্ষমতাও বাড়ায়। কাজেই ডায়েটে রোজ তরমুজ রাখা মানে যৌনক্ষমতার গ্রাফ থাকবে ঊর্ধ্বমুখী।

সুতরাং সকালের নাস্তা হোক বা বিকেলের খাবার, তরমুজের কোনও বিকল্প নেই। বহু দূর থেকে এসে চলতে পারে মন ভালো করা স্মুদিও। জেনে নিন তরমুজের আরও কিছু গুণের কথা-

পানিশূন্যতা দূর করে
তরমুজে প্রচুর পরিমাণ পানি আছে। গরমের সময় যখন ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায় তখন তরমুজ খেলে শরীরের পানিশূন্যতা দূর হয়। ফলে শরীর থাকে সুস্থ ও সতেজ।

চোখের যত্নে
তরমুজে আছে ক্যারোটিনয়েড। আর তাই নিয়মিত তরমুজ খেলে চোখ ভালো থাকে এবং চোখের নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। ক্যারোটিনয়েড রাতকানা প্রতিরোধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

শক্তি বাড়ায়
যারা শারীরিক শক্তির দিক থেকে দুর্বল তাদের জন্য তরমুজ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এই ফল শারীরিক শক্তি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

কিডনির সুস্থতায়
তরমুজের রস কিডনির বর্জ্য মুক্ত করে। তাই কিডনিতে পাথর হলে, চিকিৎসকগণ ডাবের পানির পাশাপাশি তরমুজ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ত্বকের যত্নে
তরমুজে থাকা ভিটামিন সি ত্বককে সজীব রাখে। পাশাপাশি ত্বকের যে কোন সংক্রমণে প্রতিরোধি ব্যবস্থায় সহায়তা করে। লাইকোপিনসহ বিভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধ তরমুজ খাওয়ার অভ্যাসে বার্ধক্য দেরিতে আসে। ত্বকে সহজে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে না। ত্বকে কালো ছোপ বা মেছতা যাদের আছে, তারা একবাটি তরমুজ প্রতিদিন খেতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
তরমুজে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button