টপ লিডশৈলকুপা

ঝিনাইদহে মাটি-বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে বসতভিটা

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করায় নদী ভাঙ্গণের কবলে বসতভিটা ও ফসলি জমি। সরকারি আইন অমান্য করে একটি স্বার্থনেশী মহল প্রতিবছর কুমার, গড়াই ও কালী নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করে আসছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের শৈলকুপার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর বুক থেকে মাটি ও বালু দেদারচ্ছে উত্তোলন করা হচ্ছে।দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার নিশ্চিন্তপুর, শিতলীডাঙ্গা, বালিয়াঘাট ও রতিডাঙ্গাসহ কালী নদীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নদী খেকোরা অবৈধভাবে নদীর বুক থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করছে। শ্রমিক, ভেকু ও ড্রেজার ম্যাশিনের মাধ্যমে নদীর বুক থেকে অবৈধভাবে দেদারচ্ছে মাটি ও বালু উত্তোলন করলেও প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে। এদিকে মাটি ও বালু উত্তোলনের ফলে ফসলি জমি ও বসতবাড়ী হুমকির মুখে পড়েছে।

টানা বৃষ্টিতে ও নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে আশপাশ এলাকা নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিদিন বালু ও মাটিবাহী ট্রাক গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় একদিকে যেমন রাস্তা-ঘাট নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ধুলাবালিতে অতিষ্ঠ হচ্ছে সাধারণ বসতি। রাস্তায় চলাচলে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও শিশুরা।

সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, নিশ্চিন্তপুর গ্রামের জালাল উদ্দিন ও তার ভাই সাবেক ইউপি সদস্য আলাল উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে নিশ্চিন্তপুর নদীর চর থেকে অবৈধভাবে শ্রমিক, ভেকু এবং ড্রেজার লাগিয়ে বালু ও মাটি উত্তোলন করছে। শিতলীডাঙ্গা গ্রামের নূর ইসলাম নামে এক ব্যক্তি প্রতিনিয়তই চর থেকে মাটি ও বালু উত্তেলন করায় বসতবাড়ী হুমকির মুখে পড়েছে। ভোর অন্ধকার থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ফিটনেস বিহীন ছোট বড় নানা প্রকার যানবাহনে ইটভাটাসহ নদীর এ বালি ও ফসলী জমির মাটি কেটে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে এসব মাটি ও বালু ব্যবসায়ীরা।

শিতলী গ্রামের বদর খান জানান, বালু ও মাটি ব্যবসায়ীরা মাটি কাটতে কাটতে তার বসতঘরের কাছে চলে এসেছে। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তারা। তিনি আরো জানান, বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় এমনভাবে মাটি কাটছে যে পাশের জমি তাদের দিতে বাধ্য হই। এটা তাদের একটা কৌশল।

জমির মালিকরা জানান, জমির চারিদিক থেকে ভূমি খেকোরা মাটি কেটে নেওয়ায় প্রতিবছর তাদের নিজ নিজ জমি নদীতে বিলিন হয়ে যায়, যে কারণে নিজেদের সংসার চালানোর তাগিদেই মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে জমির মাটি বিক্রি করতে হয়। প্রতিবছর বালি ও মাটি কাটার ফলে কালী নদীসহ অন্যান্য নদী ভাঙ্গণের সৃষ্টি হয়। ঘরবাড়ি ভেঙ্গে নি:স্ব হয় মানুষ, নদীগর্ভে হারিয়ে যায় তাদের ফসলী জমি।

ভূক্তভোগীরা জানান, নদী পাড়ের শত শত ফসলি জমি ও বসতবাড়ী নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার আগেই অবৈধ বালু উত্তোলন ও মাটি কাঁটা বন্ধে এখনই প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

এব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা উসমান গনি জানান, অবৈধ মাটি ও বালু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে খুব শীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button