মাঠে-ময়দানে

সাবেক তিন অধিনায়কের জবানিতে বিশ্বকাপের দল বিশ্লেষণ

ঝিনাইদহের চোখঃ

সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ (মঙ্গলবার) বেলা পৌনে ১টার সময় আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কনফারেন্স হলে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা শেষে জানা যায় কোন ১৫ জন স্বপ্নসারথি যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব।

দল ঘোষণার পর থেকেই সারাদিন ধরে চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা। গণমাধ্যম বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম- সবখানেই লেগেছে বিশ্বকাপের হাওয়া। দল বিশ্লেষণে মেতেছেন সবাই। জাগোনিউজের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সে হাওয়ায় নাম তুলেছেন বাংলাদেশের তিন সাবেক অধিনায়ক রকিবুল হাসান, গাজী আশরাফ হোসেন লিপু এবং ফারুক আহমেদ।

চলুন দেখে নেয়া যাক বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ব্যাপারে এ তিন সাবেক অধিনায়কের বিশ্লেষণ

ফিটনেস, স্কিল আর অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই দল সাজানো হয়েছে
রকিবুল হাসান

আমার মনে হয় দল ঠিকই আছে। বড় ধরনের কোন জটিলতা নেই। কারণ ১৩-১৪ জন তো প্রায় ঠিক করাই ছিল। শুধু এক থেকে দুটি পজিশন নিয়েই একটু সংশয় ছিল। তাসকিন পুরোপুরি ফিট থাকলে হয়ত হিসেবটা অন্যরকম হতো। আমার মনে হয় নির্বাচকরা এবার দল গঠনে এবার ফিটনেস, স্কিল আর অভিজ্ঞতা- তিনটি মৌলিক বিষয়ের ওপরের ওপর জোর দিয়ে দল সাজিয়েছে।

ইয়াসির রাব্বির বদলে ইমরুলকে আয়ারল্যান্ডে নেয়া যুক্তিযুক্ত হতো
গাজী আশরাফ হোসেন লিপু

আমার মনে হয় এ মুহুর্তে এটাই সম্ভাব্য সেরা কম্বিনেশন। এর চেয়ে ভাল কম্বিনেশন করা কঠিন। তবে আমি আবু হায়দার রনিকে তাসকিনের বদলে সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে নেয়ার পক্ষে ছিলাম। সেখানে নির্বাচকরা বেছে নিয়েছে আবু জায়েদ রাহীকে।

তবে আমি ইনজুরি নিয়ে খানিক চিন্তিত আছি। এর বাইরে আমি বিশ্বাস করি ইমরুলও ছিল ক্লোজ কল। কিন্তু আমার মনে হয় ইমরুল মাঝে যে সুযোগ পেয়েছিল সেটা কাজে লাগাতে পারেনি। কাজে লাগাতে পারলে দলে অবস্থান ধরে রাখতে পারতো। কিন্তু সে তা পারেনি। তাই হয়ত তাকে নেয়া হয়নি।

তবে আমি মনে করি ইয়াসির আলী রাব্বির বদলে ইমরুলকে আয়ারল্যান্ডে নিয়ে যাওয়া যেত। তার অভিজ্ঞতা আছে। আমার মনে হয় ইমরুলের দীর্ঘ আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাকে লাগানো যেত। নিজের অভিজ্ঞতার ঝাপি থেকে নানা অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আয়ারল্যান্ডে গিয়ে ইমরুল ভাল করতে পারতো।

তাসকিনকে নিয়ে কেউ কেউ কথা বলছেন। তাকে নেয়া যেত, সে দলে থাকতো পারতো- এসব বলা হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো, এখন না হয় তার ফিটনেস নিয়ে সংশয় আছে, কিন্তু তাসকিন যখন যখন দলে নিয়মিত ছিল কথন কতটা ভাল খেলেছে? তখন কি করেছে? শুধু গতি দিয়ে কি আর চলে?

দলে একজন বিকল্প বাঁহাতি স্পিনারের অভাববোধ করছি
ফারুক আহমেদ, সাবেক প্রধান নির্বাচক

প্রথমত, জাতীয় দলের জন্য আমার শুভেচ্ছা এবং অনেক শুভ কামনা। দল নিয়ে তেমন বড় কোন মন্তব্য নেই আমার। তবে একটি বিষয় দেখে ঠিক সন্তুষ্ট হতে পারছিনা, তা হলো দল ‘আনসারটেনিটি’। কেমন যেন একটা অনিশ্চয়তা চোখে পড়ল।

আমরা কবে কখন বিশ্বকাপ খেলতে যাবো, এটা তো ছয় মাস আগে থেকেই জানা ছিল। তাহলে কেন দল চূড়ান্ত করতে আবার আয়ারল্যান্ড সফর পর্যন্ত অপেক্ষা?

আমরা সবাই জানি ১২-১৩ জন মোটামুটি কনফার্ম। তার সাথে বড় জোর এক থেকে দুজনকে নিয়ে নিলেই হতো। তা না করে শুনলাম আয়ারল্যান্ডের তিন জাতি ক্রিকেট আসরের পারফরম্যান্স দেখে দল চূড়ান্ত হবে। এটা একটা বড় ধরনের অনিশ্চয়তা। এমনটা থাকা মোটেই প্রত্যাশিত নয়।

সৌম্য, লিটন আর সাব্বিরের অন্তর্ভুক্তিকে আমি নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে চাই না। বিশেষ করে সৌম্য সরকারের অতীতে ভাল খেলে দল জেতানোর রেকর্ড আছে। আমার মনে তার অতীতটাকে বিবেচনায় আনা হয়েছে।

তবে দলে একজন বাঁহাতি স্পিনার রাখতে পারলে ভাল হতো। আসলে একজন লেগস্পিনার থাকলে বেশি ভাল হতো। মানে ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের জন্য ‘অ্যাওয়ে’ বোলার দলে থাকার একটা সুবিধা আছে। তা যখন নেই, তখন বাঁহাতি স্পিনার দিয়েই কাজ চালানো যায। সাকিব তো আছেই। আমার মনে হয় দলে আর একজন বাড়তি বাঁহাতি স্পিনার থাকলে ভাল হতো। ঘুরে ফিরে একটি অনিশ্চয়তা আমাকে বেশ পোড়াচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button