জানা-অজানাঝিনাইদহ সদরটপ লিডদেখা-অদেখা

মাকে খুঁশি-সেবাযত্ন ছাড়া কোন উপায়তো দেখিনা–ঝিনাইদহের নবাই সন্ন্যাসী

মনজুর আলম, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-

রোববার ছিল মা দিবস। মা’কে নিয়ে কত কিছুই না আয়োজন করেন জান্তাগণ। পাশাপাশি নিরাপদের জন্যও তৈরি করা হয়েছে মহৎ উদ্যোগের নানা নামে বৃদ্ধাশ্রম। তবে এত কিচুর মধ্যেও রয়েছে মা পাগল কিছু মানুষ। যারা নিজে মা’কে সেবাযতœ করেই মানবতার মুক্তির পথ খোঁজেন। তেমনি একজন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামের নবাই। নবাই ভক্তরা তাকে নবাই সন্যাসি বলেই জানেন।

ইতিহাস থেকে জানা গেছে, প্রায় পাঁচশ বছর পুর্বে এ অঞ্চলের রাজ বংশের আদি পুরুষ ছিলেন ভট্টা নারায়ন। তিনি ফরিদপুরের তেলহাটি পরগনার ভবরাসুর গ্রামে বসবাস করতেন। আর এ আঞ্চলের দেখভালের দায়ি্েত্ব ছিলেন বিষ্নদাস হাজরা। নবাবের দরবারে বিষœদাস হাজরা চাকুরি করতেন। কাজকর্ম আর বিশ্বস্থের জন্য রাজা তাকে হাজরা পদবি উপাধি দেন। শেষ বয়সে তিনি ধর্মের প্রতি বিশেষ অনুরাগি হন এবং ঝিনাইদহের বেগবতি নদীর তীরে তপস্যা শুরু করেন।

১৫৯০ সালে মোঘল সুবেদার মানসিংহ বঙ্গ বিজযের পর নৌকা যোগে রাজশাহীর রাজমহলে যাচ্ছিলেন। সৈন্যরা পথিমধ্যে রসদ সংগ্রহের জন্য বনে যান এবং তপস্যিকে দেখতে পান। হাজরা দ্রæত তাদেরকে রসদ সংগ্রহ করে দেন। সুবেদার খুঁশি হয়ে তাকে অত্র এলাকার ৫টি গ্রাম দিয়ে হাজরাহাটি জমিদার ক্রমন্বয়ে নলডাঙ্গারর রাজ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।
১৮৭০ সালে রাজ বংশের ইন্দুু রাজা যক্ষারোগে আক্রান্ত হন। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। সে সময় তিনি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামে বসবাসরত রাজা গুরুগোবিন্দ ঘোষালের কনিষ্ট পুত্র রাজা বাহাদুরকে দত্তক হিসাবে গ্রহন করেন। তার মৃত্যুর পর রাজা বাহাদুর প্রথম ভুষন দেবরায় উপাধি নিয়ে সিংহাসন গ্রহন করেন। তিনি ধর্মের প্রতি বিশেষ অনুরাগি ছিলেন। তিনি ঝিনাইদহের বেগবতি নদীর তীরে কয়েটি মন্দির তৈরি করেন। যা আজো কালের স্বাক্ষি বহন করে, মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে। লোকমুখে শুনে জানা যায়, নবাই বর্তমান ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুুহাটি ইউনিয়নের বড়বাড়ি গ্রামে বসবাস করলেও এ মন্দিরের গোসাইদের নিকট দিক্ষা নিতেন এবং তার মা’কে সেবাযতেœ নিয়োজিত রাখতেন। তিনি সৃষ্টি কর্তার নৈকট্য লাভ করেন এবং তিনি মা’কে ভালোবেসে সাথে নিয়ে নিরুদ্দেশ হন।

নবাই সন্যাসির ভক্ত পরিমল বিশ্বাস নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, অনেক দিন আগে এখানে নবাই নামে একজন বসবাস করতেন। তিনি মায়ের সেবা করেই নৈকট্য লাভ করে ছিলেন। একদিন রাতে তপস্যা শেষে বাড়িতে এসে মায়ের নিকট পানি চান। সে সময় চৈত্র মাস। চারদিকে পানির অভাব চলছিল। মা জানালেন, তার বয়স হয়েছে। তাই দুর থেকে পানি আনতে পারেনি। তবে কলসে চাউল ধোয়ার পানি আছে এই পানি দিয়ে পা ধোও। নবাই মায়ের কষ্ট আর পানির অভাবে কথা অনুভব করেন। তার হাতের আশা ( বিশেষ লাঠি) নিয়ে বাড়ির চার পাশে ঘুরতে লাগলেন। মা নবাইয়ের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে উত্তর পাশের গ্রামের মধ্যে যাবার জন্য একটা রাস্তা রাখার জন্য জানান। যা আজো সেই রাস্তাটি স্মৃতি বহন করে।

উপস্থিত কয়েকজন ভক্ত জানান, নবাই পরবর্তিতে মা’কে সাথে নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে সন্যাসি হন। তিনি যে এখানে বসবাস করতেন ১৮.০২ একর জমিই বিশেষ করে প্রমান করে বলে তারা জানান।
নবাই সন্যাসির আস্তানার দেখভাল্ওে দায়িত্বে নৃপেনন্দ্র নাথ জানান, মা’কে সেবা করেই নবাই পরম নৈকট্য লাভ করে ছিলেন। মাকে খুঁশি করা বা মায়ের সেবা করা ছাড়া কোন উপায়তো আমরা দেখিনা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button