কোটচাঁদপুরটপ লিড

জমতে শুরু করেছে কোটচাঁদপুর খেজুর গুড়ের হাট

আব্দুল্লাহ বাশার, কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ চোখ-

ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার সাফদারপুরে জমে উঠেছে খেজুর গুড়ের হাট। সপ্তাহে শনি ও মঙ্গলবারে এ হাটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছেন খুচরা ও পাইকারী গুড় ব্যবসায়ীরা। উপজেলার গাছিরা সরাসরি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে বাড়িতে নিয়ে তাবালে জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করে সাফদারপুর বাজারে বিক্রি করেন।

খেজুর গাছ থেকে সংগ্রহ করা উলা রস দিয়ে তৈরি ঝোলা গুড় ও জিড়েন রস দিয়ে তৈরী হয় দানা গুড়। বেচাকেনার জন্য এই হাটের ঐতিহ্য রয়েছে শত বছরের।অন্যান্য বারের তুলনায় এবার গুড়ের সংখ্যা কম। কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। আগের আমলের গাছিরা বয়সের ভারে নুয়ে পড়ছে। খেজুর গাছ কাটা কষ্টের এ যুগের ছেলের কষ্টের কাজ করতে চাই না। কথা গুলো বলছিলেন সাফদারপুরের গাছি ও গুড় বিক্রেতা নজরুল ইসলাম।বর্তমানে গুড়ের বাজার দাম ভালো।

প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে গুড় মিল্লেও এবার বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা বেশি হওয়ায় গুড়ের সংখ্যা কম বলে মনে করছেন এখানকার গুড় ব্যাবসায়িরা। কোটচাঁদপুর উপজেলা জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে এখানে খুচরা ও পাইকারী দরে গুড় বিক্রি করতে আসেন গাছিরা। এখান থেকে রাজধানী সহ বিভিন্ন জায়গায় গুড় কিনে নিয়ে যান পাইকারী ব্যবসায়ীর। গুড়ের মান ভালো হওয়ায় প্রতি হাটে ৩০ থেকে ৩৫ লক্ষ টাকার বেচাকিনা হচ্ছে গুড় বলে জানান হাট মালিক খোরশেদ আলম। খেজুরের গুড়ের স্বাদ নেওয়ার জন্য হেমন্তের শুরু থেকেই গ্রাম বাংলায় প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।

মাটির হাড়ির বা ভাঁড়ের আকার ও ওজন ভেদে দাম ওঠানামা করে। মান ভেদে একভাঁড় গুড় বিক্রি হচ্ছে ৯ শো থেকে ১২ শো টাকায় । স্বাদে ও গন্ধে এখানকার গুড় অতুলনীয়। অন্যান্য বারের তুলনায় এখানকার খেজুর গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় দামও বাড়ছে।

স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছর শীত মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেজুর গুড়ের বেচাকেনা হয় এ হাটে। স্বাদে ও গন্ধে এখানকার গুড় অতুলনীয়। মৌসুমের প্রায় পুরো সময়জুড়েই হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট থাকে এই হাট। স্থানীয় পাইকার, মহাজন এবং বিভিন্ন মোকাম থেকে আসা ব্যাপারীরা এমনটাই দাবি করেন। খেজুরের গুড় তৈরি করে তা থেকে জীবিকা নির্বাহ করেছেন উপজেলার কয়েক হাজার পরিবার।

উপজেলা কৃষি অফিসার মহাসিন আলী জানান, উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ও চাষিদের ৫০ হাজারের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে। এই গাছ থেকে যে রস সংগ্রহ করা হয় তার থেকে ৬০০ মেট্রিকটন গুড় উৎপাদন হয়।এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করে গাছিরা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button