কালীগঞ্জটপ লিডদেখা-অদেখা

কালীগঞ্জে রাস্তা নির্মানের ৭ দিনেই উঠে যাচ্ছে ১৯ কোটি টাকার পিচ রাস্তা

সাবজাল হোসেন, ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহের চোখ-

নির্মাণের সাত দিনের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ডাকবাংলা পর্যন্ত মোট ২২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মানে বরাদ্ধ ১৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রায় ৪ কিলোমিটার সম্পন্ন হয়েছে। কিন্ত নির্মানের ৭ দিনের মাথায় নির্মনাকৃত সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে। এছাড়াও অসংখ্য ফাঁটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের দাবি, বৃষ্টির কারনে এমনটি হয়েছে। এদিকে সোমবার বিকালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি বেশি ভেঙে যাওয়া অংশে পুণ নির্মানের জন্য শ্রমিক লাগিয়ে পিচ উঠিয়ে ফেলছেন। এলাকাবাসীর দাবি নির্মিত সম্পূর্ণ অংশটাই তুলে রাস্তাটি পুনরায় নির্মান করতে হবে।

সোমবার বিকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে গান্না হয়ে ডাকবাংলা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা মজবুতিসহ ওয়ারিং এর কাজ চলছে। কালীগঞ্জ শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে পাকাকরণের জন্য কার্পেটিং বা বিচিকরণের কাজ শুরু করে ৪ থেকে ৫ দিনে ৪ কমপক্ষে কিলোমিটর কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে সড়কের শ্রীরামপুর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশে রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি এলাকবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে শ্রমিক লাগিয়ে বেশি খারাপ অংশের পিচ তুলে ফেলছেন।

খুলনার মুজাহার ইন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পান। কিন্তু হাত বদল হয়ে রাস্তার কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম মিয়া। এ রাস্তার জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১৯ কোটি টাকা। টেন্ডার শেষে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। রাস্তা খোড়া এবং ইট বালুর কাজ শেষ হয়েছে ছয় মাস আগেই। এরপর সম্প্রতি শুরু করেছে কার্পেটিং এর কাজ।

সড়কটির কাজ দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, নি¤œ মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারনে এমটি হয়েছে। তবে সিডিউল অনুযায়ী সড়কে কাজ সম্পন্নের তিন বছরের মধ্যে কোন সমস্যা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুন:মেরামত করবেন। বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে রাস্তার সমস্যা হয়েছে। তবে কাজ শুরু হলে আগে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের কাজ করা হবে।

শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা আশানুর রহমান জানান, নির্মিত সড়টির বেশি খারাপ অংশটুকু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পূননির্মানের কথা বলছেন। তিনি বলেন, অবশ্যই নি¤œ মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারের কারনে রাস্তা করতে না করতেই উঠে যাচ্ছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা পান্না মিয়া জানান, রাস্তা নির্মানের এক সপ্তাহ পার হতে পারলো পিচ ওঠে যাচ্ছে। তাহলে কয়দিন টিকবে জানিনা। তিনি বলেন, নির্মিত প্রায় ৪ কিলোমিটারের মত সমস্ত অংশটুকুই নি¤œ মানের জিনিস দিয়ে নির্মান করা হয়েছে। ফলে সম্পূর্ণটাই পিচ তুলে পুণঃনির্মান করতে না পারলে সড়ক নিয়ে জনভোগান্তি দুর হবে না।

এদিকে কাজের ঠিকাদার মিজানুর রহমান ওরফে মাসুম মিয়া রাস্তার কাজে কোন নি¤œ মানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে না দাবি করে জানান, যেখানে রাস্তা উঠে যাচ্ছে, সেখানে টিউবওয়েলের পানি যায়। যে কারনে এমন হয়েছে। তাছাড়া বৃষ্টির দিনে কাজ করায় এমনটি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার রাস্তা পুনরায় করা হবে বলে যোগ করেন স্থানীয় এই ঠিকাদার।

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দারের সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সূবর্ণা রানী সাহা জানান, নির্মিত সড়কের অংশটুকু তিনি নিজে গিয়ে দেখেছেন। নি¤œ মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারের প্রমান মিলেছে। বিষয়টি উপরি কর্মকর্তাদেরকে অবগত করা হয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button