নির্বাচন ও রাজনীতিপাঠকের কথা

প্রধানমন্ত্রীর দুর্বার নেতৃত্ব ও মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলা–সাইদুল করিম মিন্টু (সাঃ সঃ ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ)

ঝিনাইদহের চোখঃ

জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অগ্রণী ভূমিকা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ এই সংকট মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ তিনি একজন বিশ্বনেতা হিসেবে এ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এসেছেন। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা, ডাইনামিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ অতিদ্রম্নত এই করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াবে।

বিশ্বে মহামারি করোনাভাইরাসের ফলে এক সংকটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে। বিগত ১০০ বছরে বিশ্ব এত বড় সংকটে পড়েনি। যার ভয়াল থাবা থেকে বাদ যায়নি বাংলাদেশও। তবুও এই সংকট কাটাতে আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজে সব কিছুর দেখভাল করছেন। যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। একমাত্র প্রধানমন্ত্রীর দুর্বার নেতৃত্বের কারণে দেশে করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ ঘটেনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশে সর্বপ্রথম ৮ মার্চ করোনা শনাক্ত হয়। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে সভা ডেকে মুজিববর্ষের সব অনুষ্ঠান স্থগিত করেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। ২৬ মার্চ থেকে অফিস-আদালতে সাধারণ ছুটির আওতায় নিয়ে আসেন। যা বাড়িয়ে ১৬ মে পর্যন্ত করেছে। জরুরি সেবা কার্যক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের সিংহভাগ শিল্প ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। স্থগিত রয়েছে গণপরিবহণ, রেল ও বিমান চলাচল। গত ডিসেম্বরে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ‘রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর)’ ‘কন্ট্রোল রুম’ খুলে রোগটি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করা হয়। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও খোলা হয় ‘কন্ট্রোল রুম’। জানুয়ারি থেকেই দেশের সব বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং স্থলবন্দরে বিদেশ প্রত্যাগতদের থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে স্ক্রিনিং করা হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় কমিটি এবং বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নপর্যায়েও কমিটি গঠিত হয়। সংগ্রহ করা হয়েছে পর্যাপ্ত পিপিই এবং টেস্টিং কিট। বর্তমানে দেশব্যাপী ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোয় কোভিড-১৯ রোগের পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সুষ্ঠুভাবে চলছে। ৩১ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ৬৪টি জেলার জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং বিভিন্ন দপ্তরের মাঠপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সরাসরি কথা বলেন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। তারপর থেকে প্রতিনিয়ত প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা সার্বিকভাবে তদারকি করছেন। সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ নিয়েছেন। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে প্রশংসনীয় হয়েছেন। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যা করোনাভাইরাসের এই সংকট নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। কারণ বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এখানে যেভাবে আক্রান্ত ও মৃতু্যর আশংকা করা হয়েছিল, সেই তুলনায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্য দেশের থেকে এগিয়ে আছে। এক কথায় বলা যায়, যেখানে অন্য সব দেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় মুখ থুবড়ে পড়েছে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে। করোনাভাইরাস সংকটে কর্মহীন মানুষের জন্য সরকারি ত্রাণের ব্যবস্থা করেছেন। ১০ টাকা কেজি চালের ব্যবস্থা করেছেন। ইউনিয়নপর্যায়ে টিসিবির পণ্যের ব্যবস্থা পর্যন্ত করে দিয়েছেন। এই সংকটে ধান কাটতে যাতে কৃষকের সমস্যায় পড়তে না হয়। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগকে ধান কেটে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তারপর থেকে সারা দেশে ছাত্রলীগ কৃষকের ধান কেটে, মাড়াই করে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে। যা এই সংকটে কৃষকদের স্বস্তিদায়ক সংবাদ।

প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা এই করোনাসংকটে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যাতে এই সংকট মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আগের অবস্থায় দ্রম্নত ফিরে আসতে পারে। মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরবরাহ ও চাহিদা দ্বিমুখী সংকটের সম্মুখীন। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন খাতে ১১.৬০ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুধু তাই নয়- তিনি প্রায় পাঁচ কোটি লোককে সরাসরি নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করার কথা জানিয়েছেন। এছাড়া ৬০০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য ইতিমধ্যে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষকে সরবরাহের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা শরণার্থীর বিষয়টিও সরকারের সার্বিক পরিকল্পনায় নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুধু তাই নয়- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সম্মুখসারির যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলেছেন। প্রত্যক্ষভাবে করোনা আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে কাজ করা স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিশেষ পুরস্কার ও প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এজন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ডাক্তার, সব ধরনের স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্য কর্মচারীদের জন্য বিশেষ বিমাব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে পদমর্যাদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য থাকছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমা এবং মৃতু্যর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ গুণ বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা।

জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অগ্রণী ভূমিকা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ এই সংকট মোকাবিলা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ তিনি একজন বিশ্বনেতা হিসেবে এ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এসেছেন। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা, ডাইনামিক নেতৃত্বে বাংলাদেশ অতিদ্রম্নত এই করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়াবে।

সাইদুল করিম মিন্টু: সাধারণ সম্পাদক ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button