সাক্ষাৎকার

ঝিনাইদহের মনোয়ারা খাতুন : দক্ষিন বঙ্গের মহীয়সী

#ঝিনাইদহের চোখঃ

গ্রন্থনা : রওশন আরা লীনা

মনোয়ারা খাতুনের জন্ম হয় ১০ জানুয়ারী ১৯২৭ সালে যশোরের শিক্ষা সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী কাজীপুর পরিবারে।
তার পিতা : মরহুম এম লুৎফর রহমান
মাতা : মরহুম চাঁদ বিবি

শিক্ষা অনুরাগী বড় ভাই নুরুল ইসলাম শান্তির অনুপ্রেরনায় তিনি বিদ্যানুরাগী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্টিত করেন। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ডিগ্রি তিনি শুধু অর্জনই করেননি পেশাগত ক্ষেত্রে তিনি প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে ঝিনাইদহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। অসংখ্য সংগঠনের কর্ণধার হিসেবে তিনি থাকলেও তিনি সাংগঠনিক নন। তিনি ছিলেন ক্ষমতাহীন মানুষের বিশেষত নারীদের চেতনা সমৃদ্ধির শুদ্ধ বন্ধু। এই ভিন্নতাই আমাদেরকে টেনেছিল তার কাছে। স্বাধীনতা -উত্তর বাংলাদেশে রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেনের পরম্পরায় যে ক’ জন রমনী স্ব-ঔজ্বল্যে ভাস্বর, ঝিনেদার মনোয়ারা খাতুন তাদের মধ্যে অন্যতম।মনোয়ারা খাতুন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ও তার নিজের সমাজ জীবন – বাস্তবতা ও লেখা নিয়ে গ্রন্থ সমূহ শীঘ্রই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। বর্তমান কথোপকথনটি মনোয়ারা খাতুন এবং আমার একান্ত জিজ্ঞাসাবাদের কিছু অংশ ।

৭ ই জুন তার মৃত্যুঞ্জলীতে এটুকুই হতে ছিল।

দুই হাজার চৌদ্দর-সাতই জুলাই,এই মহীয়সী পৃথিবী থেকে বিদায় নেন।সাক্ষাৎকার টি মৃত্যুর একমাস আগে নেয়া।

——————————————————-

সে চেয়েছিল অসীমকে স্পর্শ করতে। হয়ত অসীমমেরও অসীমতা একদিন তাকে ছাপিয়ে পাড়ি জমিয়েছিল আরও দূর কোন অতল স্পর্শী সীমানায়। যার আভাস ধরা পড়েছে কখনও তার চোখে অথবা ঋজু অভিব্যক্তিতে। কিন্তু সবিষ্ময়ে যা আবিষ্কার তিনি এইতো আমার কাছেই অথচ বোধের যে তুলমাত্র শব্দ তিনি উচ্চারন করেন তারমাঝে প্রশান্ত প্রজ্ঞা। আজও তিনি বর্তমান।যেন সবুজ ঘাসে ছাওয়া আঙ্গিনার ওপারে সেই শুভ্র শান্ত ঘরের এক অমলিন সাধিকা সদা অপেক্ষমান ,তার সঙ্গে আমার সুদীর্ঘ দিনের যে স্নেহ সখ্য গড়ে উঠেছিলো, সেই নিবিঢ়তায় দেখাহলেই বলতেন বাড়ীতে এসো, কথা আছে। কতদিন উপেক্ষা করেছি সেই ডাক মিথ্যা সামাজিকতার মেকি অযুহাতে। আবার কখনও চোরাভ্রোতে উজানটান ছটে গেছি তারকাছে। অদ্ভুত দেখতাম এই প্রসাদাকাঙ্খী কলগুঞ্জনে আমিই একলা নই। ছুটে এসেছেন নানা জাতের হরেক রঙের মানুষ লেবুরঙা গড়িয়েযাওয়া বিকেলটা ঠিক আর দশটা দুপরের মতো নয়। একটু কোথাও আসন্ন বরষা আর গরমের চোখরাঙানীতে সজল। দিন তারিখের হিসেবে ৩-জুন দুই হাজার চৌদ্দ। হঠাৎই পলকা বাতাস। ঠাকুরমার ঝুলির মত কোথাও ব্যাঙ্গমার হাতছানি। কোন ভাবেই তা যেন কেজো জগতের উপজীব্য নয়। মন কেমন করা মন নিয়ে হঠাৎই দৌড় দিলাম সেই শান্ত সরোবরের সন্ধানে। সঙ্গী হল অতীন অভিক। কবি।

আগেই বলেছিলাম সময়টা গড়িয়ে পড়া দুপুর। ঘরে ঢুকতেই দেখা গেল তিনি আধশোয়া হয়ে পত্রিকা পড়ছেন। বিশ্রামে ব্যাঘাত ঘটালাম কি? না এসো, ভালোই হল। একটু পত্রিকা দেখছিলাম। “ভালো আছেন আপাজী”,
হ্যাঁ এই তো, “তোমরা কেমন আছো’’?
পাঠক আজও অমলিন সেই আসন্ন অপরাহ্নের অনভব মালা। একটু একটু শব্দে গেঁথে ধীর লয়ে যিনি তার বিস্তৃত অভিজ্ঞান শুনিয়েছিলেন বীজ মন্ত্রের মত আজও তার নাম সবার অন্তেরে। তিনি মহীয়সী মনোয়ারা খাতুন বড় আপাজি। টুকরো টুকরো কথায় আড্ডা আর আনন্দে হেসেওঠা সেই বিকেল শুরু হয়েছিল একটা মজার প্রশ্নে ।

আপাজি, ছেলে বেলার গল্প শুনব।

হঠাৎ? হাসেন তিনি।
না : ইচ্ছে করছে আপনার স্বপ্ন জীবন সম্পর্কে জানতে বলতে পারেন লোভ ও আপনাকে জানার।

হাসেন মনোয়ারা খাতুন। কাগজ কলম ও দেখছি এটা কি হচ্ছে সাক্ষাৎকার?
ধরুনতাই, তবে তা হবে ভাগে, ভাগে, মাঝে মাঝেই আপনার কাছে আসব আর আড্ডার চুম্বক অংশ তুলেনেবো ডায়রীর পাতায়।

আপাজিঃ আবারও স্মিত হাসি, যদিও কিছুটা ক্ষীন কালির আভাস তার চোখে দ্যাখো স্বপ্ন দ্যাখা বলছো। স্বপ্ন দ্যাখাভুলে যাচ্ছে মানুষ। অথচ স্বপ্ন দ্যাখাটা দারুন জরুরী। স্বপ্ন দেখাতে হবে আর কাজও করতে হবে। একটা সার্টেন এজ থেকে আমরা যখন ভাবতে শিখতাম তখন স্বপ্নও দেখতাম। সেই স্বপ্ন শিক্ষা থেকে স্বাধীনতা অব্দি যদিও তখন সমাজে হিন্দু শিক্ষার প্রাবল্য ছিল। বড় বড় শাড়িপরা স্কুল পড়–য়া মেয়েদের দেখে ইচ্ছে হতো ওদের মতোই আমরা ও এগিয়ে যাব।
তারপর- হ্যাঁ এখানে আমাদের কাজীপুরের বাড়ি শিক্ষা আর সংস্কৃতির আদর্শ বিকাশ ক্ষেত্রবলতে পারো। তবুও নারী শিক্ষার সচল পরিসর পেতে একটুতো দেরী হয়েছেই। যদিও বাবার স্বপ্ন ছিল আমাকে বেথুনে পড়াবেন। তবে আমার শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি বড়ভাই নুরুল ইসলাম শান্তিমিয়ার হাতে সেই সময়ে সেই পাকিস্থান আমলে বড়ভাই আমাকে অনেকবার সাইকেলে স্কুল আনানেওয়া করেছেন।

আপনার সেই সব সময়ের কথা কিছু বলুন :-

আপাজিঃ স্কুলে সচারচর অতোটা ভেদরেখা পষ্ট হয়নি আজকের মত বরং আমার যেসব বান্ধবীরা ছিল তারা সকলেই সাহসী পরবর্তীতে বড় পদেও গেছেন তারা যদিও ওপার বাংলায়। এইখানে একটা কথা মনেহয় জানো আমাদের দেশ থেকে হিন্দুদের চলেযেতে দেওয়া ঠিক হয়নি। বলতে পারো কেন? তবে তো আগে বলতেহয় আমি ত্রি-কাল দশী সময়ের টানা পোড়ন আর যুগ বদলের তিন, তিনটি কালইতো দেখছি চোখ মেলে তোমরাই বল একটি শিক্ষিত বুদ্ধিজীবি বা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সঙ্গে সহবস্থানে আখেরে আমরাই কি লাভবান হতাম না?

একটু পষ্ট করে বলুন খালাম্মা-

আপাজিঃ না কি আর আমি শুধুমেধা অর্থেওনয় ভারসাম্যের কথাও বলছি। জানো আমাদের ক্লাস এইটের পাঠ্য বইয়ে প্রথম পাই জহওরলাল নেহেরুর চিঠি, “মা মনিকে বাবা’’, তারপর একে, একে বাড়িতেই পড়ি দ্য ডিসকভারী অব ইন্ডিয়া। তাদের বোধও জ্ঞান ইতিহাস একটি জন নেতার নেতৃত্বকে দৃঢ় করতে ধারাবাহিক শিক্ষা আর ইতিহাস জ্ঞান অনেক কিছুর প্রয়োজন তবেই দেশ প্রেম ও যোগ্যতায় একজন নেতা জনগণের কাছে আস্তাশীল হয়ে ওঠেন। ভাবতে পারছ?

অ. সেতো ভারতবর্ষের ইতিহাস কিন্তু বাঙালী বিশেষত মুসলমান নেতৃত্ব নেই বলছেন?

আপাজিঃ মুসলমান রাজনীতিতে মেধা নেই কখন বললাম দিলীপ। “নিশ্চয় আছে’’। আর এটাও সত্যি জেনো, সুলতান মাহমুদের সতেরোবার ভারত আক্রমনই মুসলমান নেতৃত্বের জন্য বর্তমান প্রচলিত দস্যুতা নয়, ইতিহাস বরং আরও গভীর এবং দূরদর্শী ও দৃঢ় নেতৃত্ব আমরা পেয়েছি। বিশেষত বঙ্গবন্ধুর কথাই ধরো। তাজুদ্দীন। কিন্তু একখাও সত্য মুসলমানদের রাজনীতিতে একটা বড় খামতি আজও আছে।

বায়ান্নোর আন্দোলনের পরে বন্দেমাতরমের মতোই বাঙলা ভাষার মানুষের যে এক বিরাট নৈতিক আন্দোলন তার পরেই তো স্বাধীনতা অথচ স্বাধীনতার অথচ দ্যাখো আজকের দিনে বড় নেতা তো দূরে থাকুক মেধাহীন রাজনীতিকরা আজ সবার উপহাসের পাত্র হয়ে উঠেছেনা।

লী. আপনি তবে বলতেচান যারা আওয়ামীলীগ করলো বা কমিউনিষ্ট আন্দোলন করলো তারা নিঃসন্দেহে বোঝাপড়া নিয়ে করে?

আপাজিঃ দ্যাখো লীনা আওয়ামীলীগের একটা সুদীর্ঘ ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে। দেশও স্বাধীন। কিন্তু আজও আমাদের সমাজের সবচেয়ে বড় সাফারার রিক্সাওয়ালা কাজের লোক আর এই সব শ্রেণীর নিম্ন আয়ের মানুষেরা আজও আমি বাইরে রেরোলে বিশ টাকার ভাড়া তিরিশ টাকা দিই। কিন্তু তাতে কি ওর সবটা ভাগ্য বদলাবে? অবশ্যই তুমি কম্যুনিষ্ট আন্দোলন গুলো দ্যাখো। মার্কসিষ্ট রাজনীতি শুধু নয় কাস্ত্রোকে দ্যাখো। পৃথিবীর ইতিহাস জানো তোমার উত্তর নিজেই পেয়ে যাবে। পৃথিবীতে আজও একটাই রাজনীতিক শাসক আর শোষিতের লীনা। এটা পষ্ট বুঝতে হবে। দ্যাখো দুটো জিনিস মানুষকে সবসময় প্রলুব্ধ করে অর্থ আর ক্ষমতা।

অ, এটা মেয়েরা বেশি চায়।

আপাজিঃ মেয়েদের নামে একদম নিন্দানয়। মেয়েরাই সত্যকার সবকিছুর পরও স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে জানে। দ্যাখো আমরা ওইযে পাহাড়ে চড়ল মেয়েটা নিশাত মজুমদার, আমাদের সালমা? হ্যাঁ, সালমা, নিশাতকে খুব ভালোলাগে। এছাড়া অন্যান্য মেয়েদেরও যারা সাহসও সততা নিয়ে এগিয়ে আসে সামনে বা কোন চ্যালেঞ্জিং কাজ করে সফলতার সাথে তখন আমার খুবই গর্বহয়। মেয়েরা নিজেদেরে পরিচয়ে বাঁচতে শিখুক।

সত্যিকার শিক্ষিত না হলে মেয়েদের ব্যক্তিত্বের সঠিক বিকাশও ঘটেনা এই আমার এস, এস, সিরতেপর বিয়েহয় তারপর সংসার বলতে পারো ঘরোয়া সব কাজ কিন্তু পড়া থেমে থাকেনি। ১৯৫০ সালে চাকরীতে জয়েন করি ৬২ তে হেডমিস্ট্রেস। কিন্তু চাকরি নয় তখন নানাবিধ আন্দোলন সংগ্রামে যে নেতৃত্বদেয়া তার জন্যে কম অত্যাচার সইতে হয়নি আমাকে কিন্তু আমরা যারা সেই দিন ছিলাম মাথা উঁচুকরে বাঁচতে জানতাম।

লী. আর প্রেম?

আপাজিঃ কাজ আর আদর্শের সঙ্গে। আমার ঐ মেয়েটিকে খুব ভাললাগে অত্যান্ত মেধাবী প্রথম মুসলমান মেয়েদের এস,এ তে মধ্যে প্রথম ফাষ্টক্লার্স পান। ফজিলাতুন্নেছা। একটি মেয়ের আত্মমর্যাদা থাকবেনা? এটা আসে সত্যিকার শিক্ষা হতে। আমার জীবনের অনেকটা সময় যেহেতু পার করেছি নানা সংগ্রামে। আসলে পস্টকরে দেখতে পাওয়াটাও চাই।

লী. আমি যদি সংখ্যা হিসাব করি তেত্রিশ বছরের বেশি আপনার আন্দোলন এখন আপনার কী মনেহয় ব্রিটিশ পিরিয়ড ভালো না বর্তমান সময়।

আপাজিঃ দ্যাখো দিলীপ ব্রিটিশরা বাঙালীর জন্য অনেককিছু করলেও তার সাথে আমাদের শোষন করেছিল এটা সবচেয়ে বড় সত্যি। কিন্তু যে শিক্ষা আর বিজ্ঞান তারা এনেছিলো তার জোরেই আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে পারছি। যদিও এই শিক্ষার প্রথম সুবিধা নেয় হিন্দুরা না না আমাকে বলোনা কিছু এটা আমার ব্রিটিশ প্রীতি নয় এটা অন্যব্যাপার। শিক্ষা চালু করেছিলো ব্রিটিশ নিজেরি স্বার্থে কিন্তু পক্ষান্তরে শাপে বরের মতো তা আমাদেরই কাজে লাগে।

আপা, সাম্প্রতিক রাজনীতি নিয়ে কিছু বলুন?

আপাজিঃ বর্তমান রাজনীতিতে অনেক অপরিনাম দর্শিতাই দেখাযাচ্ছে। বলতে পারো স্বাধীনতা যুদ্ধের পরেও আমাদের জামাত আর ওপারে মোদী কেন এতবড় জয়নিয়ে ক্ষমতায় এলো? এর কারন বোধাহয় আগেই বলেছি পরবর্তীকালে মুসলিম নেতাদের অজ্ঞতা আর লিপ্সা তাদের কে সমালোচনার পাত্র করে তুলেছে। আর ভারতের কথা বলতে পারো ব্রিটিশ আমল থেকে প্রায় কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিলো। তাদের শাসনের একঘেয়েমী থেকে দেশসবাসী পরিবর্তন চেয়েছিল। অর্থনৈতিক সংস্কৃতিক সামাজিক পরিবর্তন আর সেই ইচ্ছা শক্তির কারণেই দীর্ঘকাল দেখানো কংগ্রেসের বড় স্বপ্ন ও স্বপ্ন ভাঙ্গের বেদনায় মোদীর জয়।

অ. অবসরে কি করেন? অথবা এত সংগ্রাম ভূপেন হাজারিকার গান শোনেন?

আপাজিঃ একটু হেসে। দ্যাখো রোকেয়া মুসলমান রন্ধন শালার যে চিত্র বর্ণনা করেছেন আমি তার সঙ্গে একমত। সবসময়ই একটি শিক্ষিত মেয়ের রান্নাঘর প্রিতী আমার অপছন্দ। মেয়েরা কাজ করবে ঘরে বাইরে আর ভূপেন হাজারিকার গান, না খুব শোনা হয়না। বলতে পারো ভূপেন হাজারিকার গান তারপর কিছুদিন আগে ছেলেমেয়েরা যে আন্দোলন করল। সকল বুদ্ধিজীবি মহল সমর্থন দিয়েছে হ্যাঁ গণজাগরণ মঞ্চ কিন্তু এরও আগে তোমরা মনেকরে দ্যাখো

বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষন কি বড় একটা জোয়ারের জন্ম দেয়নি বল? আর আমার অবসর পত্রিকা বই পড়া কখনও দুপুরে ঘুমাইনা। আমি পড়ি আজকাল ঘরে থাকতে ভালোলাগেনা। বাইরে বেড়াতে মানুষ দেখতে ভালোলাগে ঐ যে, শহরের বাইরের দিকে বাইপাস সড়ক কখনও রিক্সানিয়ে চলেযাই। সবুজ আর নির্জনতা নিশাত মেয়েটা পাহাড়ে চড়ল তুমি কালো কোর্ট।

লী. খালাম্মা, একদিন এসে তবে আপনাকে নিয়ে বেড়াতে যাব।

আপাজিঃ হ্যাঁ সে যাওয়া যাবে সেদিন চলেগেছিলাম অশোকের বাড়ি, মেডোনাদের ঐসব পাড়ায় সহ আরও সব পুরোন ছাত্রীদের খুঁজে পাওয়াযায় ভাল লাগে।

লী. খালাম্মা, যদি বলি আপনার দর্শন?

আপাজিঃ আমর দর্শন কি? আমি দ্যাখো মানুষের মুক্তির উপর কিছুই জানিনা। আমার বয়স হয়েছে একদিন চলেযাব। কিন্তু মানুষ বিশেষ করে মেয়েরা মানুষ হয়ে উঠেছে এটা দেখেযেতে পারলে ভাল হতো। দিলীপ আমার শীররটা একটু খারাপ লাগছে।

বিষয় বস্তুর হাতধরে কখন বিকেল গড়িয়েছে আমরা বুঝতেই পারিনি। আড্ডার ফাঁকে কখনও এসে যোগদিয়েছেন তার পুত্রবধু ফরিদা বেগম আর বনেদিয়ানার আপ্যায়ন শেষে প্রতিদিনের ক্লিশে ক্লান্ত আমিটাকে বাদদিয়ে এক দীপ্ত আমিকে সঙ্গেনিয়ে ঘরে ফেরা। মনোয়ারা খাতুনই জানতেন মেরুদন্ডকে সোনাদিয়ে বেঁধে দিতে। শুধু আমরাই পারিনি তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে যেতে বা আর কোনওদিন আড্ডা দীর্ঘায়িত করতে। এই মহীয়সীর সঙ্গে যে দিন শেষ দেখাহয় সেদিনও আমার গায়ে আইনজীবি পোশাক। হাতটা জাড়িয়ে ধরে বললেন সাহসী মেয়েদের আমি ভালবাসি মহিয়সী মনোয়ারা খাতুনের এ সব কথা পরস্পর তুলেধরা আমার পক্ষে প্রজ্ঞাপূর্ণ মহিয়সী মনোয়ারা খাতুনকে আরও একবার বোঝার উপলব্ধির ও ভালবাসার অসংকাচ ও নৈতিক দায়।

তারিখ- ৩-জুন ২০১৪, ঝিনেদা।

সূত্রঃ অ র ণ্যা নী

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button