অন্যান্য

তরুণ‌দের যে বার্তা দি‌লেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হা‌সিনা তরুণ‌দের উ‌দ্দে‌শে বলে‌ছেন, অসুস্থ প্র‌তি‌যো‌গিতায় ছুট‌বে না, নি‌জে‌কে ছোট ম‌নে কর‌বে না। কখনও হতাশায় ভুগ‌বে না। ইচ্ছাশ‌ক্তি থাকাটা খুব জরুরি। ই‌চ্ছে থাক‌লে যেকোনো বাধা অ‌তিক্রম কর‌তে পার‌বে। অার য‌দি তোমা‌দের ম‌ধ্যে সততা থা‌কে তাহ‌লে তোমা‌দের কেউ হারা‌তে পার‌বে না।

পূ‌র্বে ধারণকৃত তরুণ‌দের স‌ঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ‘লেটস টক উইথ শেখ হা‌সিনা’ অনুষ্ঠা‌নে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন। বি‌টি‌ভি, মাছরাঙা টি‌ভি, অারটি‌ভি ও ডি‌বি‌সি নিউ‌জে অনুষ্ঠান‌টি অাজ প্রচার করা হয়।

ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়ার হিসাব না করে দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবেসে, দেশের জন্য কাজ করতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দেশকে ভালোবাসতে হবে, মানুষকে ভালোবাসতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে কী পেলাম না পেলাম… দেশের জন্য কতটুকু দিতে পারলাম, মানুষের জন্য কতটা দিতে পারলাম তা ভাবতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী ব‌লেন, সবসময় একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চললে দেশকে কিছু দিতে পারবে, নিজেও জীবনে কিছু করতে পারবে। হতাশ হওয়ার সুযোগ নেই। জীবনে অনেক ঝড়ঝাপ্টা আসবে। কিন্তু ইচ্ছাশক্তি প্রবল থাকলে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে যদি কেউ এগিয়ে যায়। তাহলে কোনো বাধাই বাধা বলে মনে হবে না। দেশকে এতদূর নিয়ে আসতে পেরেছি, তার প্রধান কারণ এই ইচ্ছাশক্তি। জাতির জনক বলে গেছেন, মহৎ অর্জনের জন্য মহান ত্যাগের প্রয়োজন। ত্যাগের মধ্যে দিয়েই অর্জন করা যায়। আর সৎ থাকতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, যদি সৎ না থাকতাম, তাহলে ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করতে পারতাম না। পদ্মা সেতুর কাজও শুরু করতে পারতাম না। আমার এই একটি সিদ্ধান্ত বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের আত্মমর্যাদাকে অন্য একপর্যায়ে নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আর আমি মনে করি বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে আমাদের তরুণ প্রজন্মই পারবে। আজকে যারা তরুণ শুধু তারা নয়, বরং ভবিষ্যতেও, যেমন আজকেও যে শিশুটি জন্মাবে সেও তো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে। তবে তাদের জন্য একটি সুন্দর সমাজ গড়ে রেখে যেতে চাই।

কবে দুর্নীতি মুক্ত হবে বাংলাদেশ? তরুণদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এটা আমার লক্ষ্য আছে। আমি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছি। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। এরপর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা সরকারি কর্মকর্তাদের আয়-উপার্জনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। সেখানে দুর্নীতি করার দরকার কী? অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসতে পারলে দুর্নীতি বন্ধ করা সম্ভব।

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আপনি কাজ করে গেছেন। এটি নিয়ে আপনার মধ্যে কোনো শঙ্কা কাজ করেছে বা করছে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমি চেয়েছি দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক।…আমি বুঝেছিলাম, জঙ্গিবাদ থাকলে কোনো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। বিরোধী দলে থাকি, আর সরকারি দলে; যেটা নীতির ব্যাপার সেটার বিষয়ে সোচ্চার হওয়া। শুধু সরকারি দলে আসলেই করব, বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় করব না এমন নয়। আমার দেশকে আমি ভালোবাসি। আর সে কারণেই এ বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে সবসময় প্রতিবাদ করেছি।

তিনি বলেন, আর আমাকে তো অনেকবার হত্যার চেষ্টা হয়েছে। কয়েকবার না অনেকবার। এমনকি সামনে থেকে গুলি করেও হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে আমাকে। যখন বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়েছি তখনও বাধা পেয়েছি। কিন্তু একটা বিষয়, এ দেশের মানুষ, যেখানে গিয়েছি সেখানে এত ভালোবাসা পেয়েছি। এই ভালোবাসা আমার শক্তি। সেটাই আমার প্রেরণা। দেশটা তোমা‌দের হা‌তে তু‌লে দিলাম। পরবর্তী‌তে তোমরাই এ দে‌শের নেতৃত্ব দে‌বে।

লেট’স টক উইথ শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো তরুণদের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী। গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, তরুণ পেশাজীবী, অ্যাথলেটস, খেলোয়াড়, সংস্কৃতিকর্মীসহ দেড়শোর মতো তরুণ অংশ নেন।

তরুণদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শোনেন তরুণদের স্বপ্নের কথাও। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ডা. নুজহাত চৌধুরী।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button