জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখামহেশপুর

ঝিনাইদহের মহেশপুরে কাঁঠাল পানির দরে বিক্রি/হতাশ কৃষকরা

মোমিনুর রহমান মন্টু, ঝিনাইদহের চোখ-

ঝিনাইদহের সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারে কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে একেবারে পানির দরে। ১৫ কেজির উপরে বড় সাইজের একটি কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আর মাঝারি সাইজের কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫- ২০ টাকায়। ফলে দাম না পাওয়ায় এলাকার অনেকে কাঁঠাল ছাগল গরু দিয়ে খাওয়াচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর এ অঞ্চলে কাঁঠালের উৎপাদন মোটামুটি ভালো হলেও করোনার কারনে ক্রেতা নেই। ফলে বাজারে যোগানের পরিমান বেশি হওয়ায় ক্রেতারা কাঁঠাল কিনতে চাচ্ছে না। এ কারনে কাঁঠালের দাম নেমে গিয়েছে।

জেলার মহেশপুর উপজেলা খালিশপুর বাজারে সপ্তাহে ২দিন কাঠালের হাট বসে। শুক্রবার ও সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত চলে কাঠালের হাটে কাঁঠাল বেচা-কেনা হয়। এবার প্রতি হাটে এখান থেকে প্রায় ৬০-৭০ ট্রাক কাঠাল বিক্রি হত কিন্তু এবছর করোনার কারেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা আসছে না। অন্যবার যেখানে বড় সাইজের একটি কাঠাল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হতো সেখানে এবার মাত্র ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর মাঝারি সাইজের কাঠাল ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫-২০ টাকায়। খালিশপুর কাঠালের হাটে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকশ স্যালোইঞ্চিন চালিত নসিমস, করিমন ভ্যান করে কাঁঠাল আনা হয়েছে।

কিন্তু দুপুর ১২টা পর্যন্ত বাজারে কোন ক্রেতা বা কাঠাল ব্যবসায়ীকে দেখা যায়নি। খালিশপুর-মহেশপুর ও কালীগঞ্জ-জীবননগর সড়কের দুধারে কাঁঠাল বিক্রির অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। জাতীয় ফল কাঁঠাল আকারে বড়, পুষ্টি সমৃদ্ধ ও গুনমান অনেক বেশি। কাঁঠালের কোন অংশই ফেলনা নয়। পাকা কাঁঠালের কোশ সুস্বাদু খাবার, বাকল গবাদি পশুর খাদ্য, বীজ ও কাচা কাঁঠাল তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়।

কৃষক ও কৃষি অফিসে সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মাটি কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী। উপজেরার প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনায় ৪/৫ টি কাঠাল গাছ দেখতে পাওয়া যায়। অনেকে আবার বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করছেন। কাঁঠাল গাছে তেমন পরিচর্যা করতে হয় না। জেলায় এবার কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে।

ঢাকা, বরিশাল, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারীরা কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা খালিশপুর বাজার থেকে কাঠাল কিনে নিয়ে যায়।

বরিশাল থেকে আসা কাঁঠাল ব্যবসায়ী মানিক জানান, এবার করোনার কারনে ক্রেতারা বাজারে আসছে না যে কারনে কাঁঠাল বেচাকেনাও কম। তারপরও আমি অনেক ঝুকি নিয়ে এক গাড়ি কাঁঠাল নিয়ে যাচ্ছি। বেশ কয়েকজন কাঠাল ব্যবসায়ী ও কৃষক জানান, যদি এলাকায় সরকারীভাবে কাঠাল চাষীদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা ও কাঠাল সংরক্ষনের কোন ব্যবস্থা থাকতো তাহলে সারা বছর এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঠাল সরবরাহ করা যেতো।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button