টপ লিডশৈলকুপা

ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় গড়াগড়ি খাচ্ছিলেন ঝিনাইদহের পারভেজ

কুষ্টিয়া-পাবনা জেলার সীমানায় পদ্মা নদীর ওপর প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের সবচেয়ে বড় রেল সেতুর নাম ‘হার্ডিঞ্জ ব্রিজ’। আজ শুক্রবার ভোরে ঢাকা থেকে খুলনাগামী চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে দুজন যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ছয়জন। এর মধ্যে পাঁচজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন সেনাসদস্য রয়েছেন।

হাসপাতালে ভর্তি আহত ট্রেনযাত্রী ও একজন প্রত্যক্ষদর্শী নিশ্চিত করেছেন যে হতাহত যাত্রীরা সবাই ট্রেনের ছাদে ছিলেন। তাঁদের সবার মাথায় আঘাত রয়েছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পাঁচজনের মধ্যে তিনজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন যশোরের অভয়নগরের শিংগাড়ি গ্রামের হাফিজুর রহমানের ছেলে আবদুল্লাহ, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার আঙ্গুনিয়া গ্রামের ছাবের হোসেনের ছেলে পারভেজ আলী ও কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলার চকঘোগা গ্রামের শাহাজুল ইসলাম। বেলা ১১টায় আবদুল্লাহকে তাঁর পরিবারের সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে করে যশোর সেনানিবাসের হাসপাতালে নিয়ে গেছে। পারভেজকে ঢাকায় স্থানান্তর করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আহত যাত্রী সাহাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। রাতে চিত্রা ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন। ট্রেনের ভেতরে জায়গা না পেয়ে ছাদে ওঠেন। হার্ডিঞ্জ সেতুতে পৌঁছালে হঠাৎ মাথায় আঘাত পান। এরপর কিছু মনে নেই তাঁর।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মাদিয়া গ্রামের শামীম হোসেন ওই ট্রেনের যাত্রী ছিলেন। তিনি জানান, তিনি ট্রেনের ‘জ’ বগিতে ছিলেন। আজ ভোর পৌনে পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় এক ঘণ্টা ট্রেনটি ঈশ্বরদী স্টেশনে দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় ছাদে থাকা অন্তত ৫০–৬০ জন যাত্রী নেমে যায়। পাঁচটা ২০ মিনিটে ভেড়ামারা স্টেশনে ট্রেনটি পৌঁছালে তিনি দেখতে পান, ট্রেনের ছাদ থেকে রক্ত চুঁয়ে নিচে পড়ছে। স্টেশনে নেমে দেখতে পান, ছাদে পাঁচজন যাত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় গড়াগড়ি করছে। তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, আহত দুজনকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ হাসপাতালে তিনজন চিকিৎসাধীন। সবার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে নিহত দুজন হলেন জালাল উদ্দিনের ছেলে রবিউল ইসলাম (২০) ও হাফিজার রহমানের ছেলে মোহাম্মদ হাকিম (১৬)।
ট্রেনটি হার্ডিঞ্জ ব্রিজে ওঠার পর তিনজন যাত্রী ট্রেন থেকে নিচে পদ্মা নদীর চরের ওপর পড়ে যান। ঈশ্বরদী ইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, পাকশী রেলওয়ে স্টেশনমাস্টারের কাছ থেকে খবর পেয়ে সকাল সাতটার দিকে ফায়ার সার্ভিস চর থেকে ওই তিনজন যাত্রীকে উদ্ধার করে। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই তিনজনের মধ্যে আহত যাত্রী হলেন রেজাউল করিমের ছেলে মোহাম্মদ শান্ত (২১)।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button