জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখাশৈলকুপা

ঝিনাইদহের কুমার নদীতে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে অবাধে মাছ শিকার/বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ

শাহীন আক্তার পলাশ, শৈলকুপা, ঝিনাইদহের চোখ-
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কুমার নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করছে কিছু অসাধু মাছ শিকারী। এতে পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ রুপ ধারণ করছে। নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের পর এবার শুরু হয়েছে কারেন্ট জালের চেয়েও সুক্ষ চায়না জালের ব্যবহার। চায়না জাল নদী জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে। এতে করে প্রাকৃতিক সব ধরনের দেশীয় মাছ ধরা পড়ছে। ডিমওয়ালা মাছগুলি ছেঁকে উঠছে এই চায়না জালে । এতে করে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে কুমার নদ।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার এক শ্রেণীর লোকজন বাজার থেকে চায়না জাল কিনে কুমার নদীতে অবাধে মাছ শিকার করে যাচ্ছে। প্রতিদিনই মাছ ধরার এদৃশ্য চোখে পড়ে, কেউ কেউ ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে নিয়েছে কুমার নদীর পাড়ে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার গাড়াগঞ্জ থেকে শুরু করে একই উপজেলার আবাইপুর গ্রাম পর্যন্ত ২৫ কি.মি. জায়গা জুড়ে নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। হাজার হাজার ফুট নিষিদ্ধ চায়না জাল ২০০ থেকে ৩০০ গজ পর পর পেতে রাখা হয়েছে। ডিঙি নৌকা নিয়ে প্রতিদিন বিকাল থেকে শুরু হয়ে যায় এই জাল পাতার প্রক্রিয়া এর পর সারারাত পেতে রাখার পর সকাল থেকে চলে জাল গোছানোর পালা।

জালে ধরা পড়ে একে একে করে বিভিন দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় মাছ।শুধু মাছই নয় নদীতে থাকা কোন জলজ প্রাণীও রক্ষা পাচ্ছে না। এমনকি মাছের ডিমও ছেকে তোলা হচ্ছে এই চায়না জাল থেকে ।

বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মধ্যে চিংড়ি, পুটি, বুই কাতলা ,টেংরা, কই শিং ,মাগুর, তেলাপিয়া , বেলে, বোয়াল, শোল, টাকি থেকে শুরু করে ছোট বড় কোন মাছই রেহাই পাচ্ছেনা এই নিষিদ্ধ চায়না জাল থেকে।

মাছ শিকার করতে আসা গোবিন্দপুর গ্রামের আসলাম বলেন, এই জাল সারারাত নদীতে পেতে রাখি , সকাল হলেই জাল তুলে ফেলি, জালে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে থাকি। এই জাল দিয়ে মাছ শিকার করা ঠিক না, জেনেও কিছু মাছ পাওয়ার আশায় একাজ করে থাকি।

ঝাউদিয়া গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী নিমাই বলেন, এভাবে মাছ শিকার করা ঠিক না এভাবে চায়না জাল দিয়ে মাছ মারলে,কিছুদিন পর নদীতে আর কোন মাছ পাওয়া যাবে না।

এব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার একটা বে-আইনী কাজ, আমরা খুব তাড়াতাড়ি কুমার নদীতে অভিযান পরিচালনা করবো।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, নদীতে এভাবে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ শিকার করা ঠিক না , অবশ্যই এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। কোন ভাবেই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেওয়া যাবে না।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button