টপ লিডশৈলকুপা

২ কিঃমিঃ ভাঙ্গাচুরা রাস্তার জন্য ২ উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন

#ঝিনাইদহের চোখঃ

মাত্র ২ কিলোমিটার ভাঙ্গাচুরা রাস্তা দুই উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে করে রেখেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দূর্গাপুর আর শৈলকুপা উপজেলার পিড়াগাতি গ্রামের মাঝের এই ২ কিলোমিটার রাস্তা ভেঙ্গেচুরে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। ভাঙ্গা ওই স্থান দিয়ে ভ্যান-রিক্সা ছাড়া কোনো ভারি যানবাহন চলাচল করতে পারে না।

স্থানিয়রা বলছেন, সামান্য এই রাস্তাটির জন্য শৈলকুপা উপজেলার শেষ প্রান্তের মানুষগুলোর ঝিনাইদহ শহরে আসতে হয় ৩০ কিলোমিটার ঘুরে। দুই পাশে ৩২ কিলোমিটার পিচঢালা রাস্তা থাকলেও মাঝের এই মাত্র ২ কিলোমিটার চলাচলের একেবারেই অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে সরকারের এলজিইডি দপ্তরে একাধিকবার চেষ্টা করেও রাস্তা ভালো করার কোনো ব্যবস্থা করতে পারেনি। ফলে পাশ^বর্তী কমপক্ষে ১০ টি গ্রামের মানুষকে কষ্ট করেই চলাচল করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের ঝিনাইদহ অংশের পাঁচমাইল নামক স্থান থেকে উত্তর দিকে আরেকটি পিচঢালা রাস্তা চলে গেছে। এই রাস্তাটি ঝিনাইদহের বিজয়পুর, দুর্গাপুর, শৈলকুপার পিড়াগাতি, ফাদিলপুর হয়ে শৈলকুপা শহরে পৌছেচে। শৈলকুপা শহর থেকে ফাদিলপুর হয়ে পিড়াগাতি গ্রাম পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার পিচঢালা রাস্তা রয়েছে। আর দূর্গাপুর থেকে ঝিনাইদহ শহর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার রাস্তাও পিচঢালা। কিন্তু দূর্গাপুর ও পিড়াগাতি গ্রামের মাঝে ২ কিলোমিটার রয়েছে ভাঙ্গাচুরা। সেখানে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। এই গর্ত পেরিয়ে ভ্যান-রিক্সা কষ্ট করে চলছে। কিন্তু বড় কোনো যানবাহনের চলাচলের কোনো সুযোগ নেই।

দূর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা সাগর হোসেন জানান, রাস্তাটি ১৪ থেকে ১৫ বছর পূর্বে সংষ্কার হয়েছিল। সেই সময় পিচঢালা রাস্তা তৈরী করা হয়েছিল। এরপর ঝিনাইদহ অফিসের পক্ষ থেকে দূর্গাপুর গ্রামের বসতি এলাকার শেষ পর্যন্ত আর শৈলকুপা অফিসের পক্ষ থেকে পিড়াগাতি গ্রামের বসতি এলাকার শেষ পর্যন্ত মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু উভয় অংশে মাঠের মাঝের ২ কিলোমিটার কেউ মেরামত করেনি। ফলে ওই দুই কিলোমিটার ভেঙ্গেচুরে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে।
তিনি জানান, ওই স্থানটি এতোটাই ভেঙ্গেচুরে গেছে যে সেখানে তৈরী হওয়া গর্ত পেরিয়ে চলাচল সম্ভব নয়। ছোট ছোট যানবাহনগুলো টেনে উঠাতে হয়। আর বড় বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার নিয়ে কেউ এই রাস্তা দিয়ে যেতে পারেন না।

শৈলকুপা উপজেলার পিড়াগাতি গ্রামের আমিনুর রহমান জানান, ফাদিলপুর বাজারটি শৈলকুপা উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। এটি একটি বড় বাজার। এই বাজারের দোকানীরা অভিযোগ করেন এই সামান্য রাস্তাটির জন্য তারা ঝিনাইদহ শহরে মোকাম করতে পারছেন না। যারা করছেন তাদেরও শৈলকুপা শহর হয়ে ঝিনাইদহ যেতে হচ্ছে। এতে তাদের অতিরিক্ত ৩০ কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে। তারা দূর্গাপুর হয়ে ঝিনাইদহ গেলে মাত্র ১৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেই যেতে পারে। এছাড়া তাদের এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পন্যও সহজে বাজারজাত করতে পারছেন না এই মাত্র ২ কিলোমিটার রাস্তার জন্য। এ বিষয়ে তারা একাধিকবার ঝিনাইদহ এলজিইডি অফিসে যোগাযোগ করেছেন, কিন্তু রাস্তাটি সংষ্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

ওই সড়কে চলাচলকারী ভ্যান চালক মিজানুর রহমান জানান, তারা কষ্ট করেই চলাচল করছেন। ভ্যান গাড়িতে করে যাত্রী পরিবহন করেন এই মিজানুর রহমান। ভাঙ্গাচুরা স্থানে এসে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে হয়। এরপর ভ্যানটি টেনে তুলে ভাঙ্গা স্থান পার হতে হয়। বড় বড় গর্তগুলো এভাবে পার হন। ভেঙ্গে যাওয়া ২ কিলোমিটারের বাকি স্থান দিয়ে কষ্ট করে চালিয়ে যান তারা। দূরত্ব কম হওয়ায় তারা কষ্ট করেই চলাচল করেন। কিন্তু ভারি কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারে না বলে জানান ভ্যান চালক মিজানুর রহমান।

এ বিষয়ে এলজিইডি’র ঝিনাইদহ সদর অফিসের প্রকৌশলী ফয়সাল আহম্মেদ জানান, এই রাস্তাটি সংষ্কারের জন্য তারা কয়েকদফা উচ্চ পর্যায়ে লিখেছেন। কিন্তু এখনও বরাদ্ধ পাননি। আবারো বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করবেন বলে তিনি জানান। বরাদ্ধ পেলেই দ্রæত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button