জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখাশৈলকুপা

ঝিনাইদহের ভ্যানচালক রিপন নিজের খাবার থেকে পাখিদের খাওয়ান

খাইরুল ইসলাম নিরব, ঝিনাইদহের চোখ-
ভোর হলেই যেন তার অপেক্ষা করে শালিকের ঝাঁক। করোনার কারণে আয় রোজগার কম। তারপরও প্রতিদিন সকালে নিজের স্বল্প আয় থেকে কিছুটা বাঁচিয়ে ক্ষুধার্ত পাখিদের খাবার দেন তিনি। বলছি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ এলাকার ভ্যানচালক রিপন হোসেনের কথা।

সোমবার সকালে গাড়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের মধু বিশ্বাসের চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায় রিপন হোসেন দোকান থেকে খাবার কিনে রাস্তায় ছিটিয়ে দিচ্ছেন। আর শালিক পাখির ঝাঁক যেন খাবার খাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। খাবার খাওয়ার দৃশ্য দেখে রিপনের ঠোটে ছিল তৃপ্তির হাসি।

ভ্যানচালক রিপনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গাড়াগঞ্জ বাজারপাড়া এলাকার বাসিন্দা তিনি। ব্যাটারী চালিত ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার হয় তা দিয়েই চলে তার সংসার। প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পর মধু বিশ্বাসের দোকানের সামনে এলেই শালিকের ঝাঁক তাকে দেখে কিচির মিচির শব্দ শুরু করেন। নিজের অল্প আয় থেকে টাকা বাচিয়ে পাউরুটি, চানাচুরসহ নানা প্রকার খাবার দেন তিনি।

পাখিদের কিচির মিচির শব্দ আর খাবার শেষে পাখিদের জলকেলিতে মাতার দৃশ্য যেন মনোমুগ্ধকর। যা দেখে মুগ্ধ মুগ্ধ আশপাশের মানুষগুলো।

চা দোকানি মধু বিশ্বাস বলেন, সকালে পাখিগুলো যখন খাবার খাই তখন দেখতে খুবই ভালো লাগে। কিচির মিচির শব্দ করে যা শুনে মনটা ভরে যায়।

একই এলাকার হেলাল উদ্দিন বলেন, করোনার কারণে এখন মানুষের আয় রোজগার কম। মাঠে ঘাটে এখন খাবার কম। যে কারণে শালিক পাখির দল বাজারে ভীড় করে। রিপন হোসেন খাবার দেন এতে স্থানীয় অনেকেই মাঝে মাঝে সহযোগিতা করে। তারপরও তা পর্যাপ্ত না।

এ ব্যাপারে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষন কমিটির ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ব্যক্তিউদ্যোগে যারা পাখির খাবারের ব্যবস্থা করেন তাদের সরকারি ভাবে সহযোগিতা করা উচিত। শুধু সহযোগিতায় নই পাখির সংরক্ষণ ও তাদের খাবারের ব্যবস্থা যদি করা হয় তাহলে একসময় ঝিনাইদহ জেলা হবে পাখির অভয়াশ্রমের মডেল্।

ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, করোনা মহামারিতে শুধু মানুষ নয় পক্ষীকুলও খাবার সংকটে আছে। যারা পাখিদের খাবারের ব্যবস্থা করছেন তাদের আমরা সাধুবাদ জানায়। আমরা সবসময় তাদের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button