ঝিনাইদহ সদরটপ লিড

টেলিমেডিসিন সেবাও দিচ্ছেন ঝিনাইদহের চিকিৎসকরা

ঝিনাইদহের চোখ-

জনবলসহ নানা সংকটের মধ্যে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকটা নির্ঘুম সেবা দিতে হচ্ছে তাদের।

সারাদিন হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করার পর টেলিমেডিসিন সেবাও দিচ্ছেন তারা।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ঘোষণা করা হলেও বর্তমানে ১০০ শয্যার উপকরণ নিয়ে জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষের সেবা দিচ্ছে হাসপাতালটি। ৪০ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও বর্তমানে সেবা দিচ্ছেন মাত্র ২৪ জন। ট্রেনিং ও ডেপুটেশনে থাকার কারণে বাকি ১৬ জন জেলার বাইরে রয়েছেন।

এছাড়াও হাসপাতালটিতে রয়েছে নার্সসহ অন্যান্য জনবল সংকট। এসব সংকটের মধ্যেও গত মাসে হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ও বর্হিবিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ১২ হাজার ৫৬৫ জন রোগীকে। এছাড়াও প্রতিদিন ৫ থেকে ৬শ রোগীকে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে আগের তুলনায় বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা অনেকটা কম দেখা গেছে।

সরেজমিনে হাসপাতালগুলোতে দেখা যায়, শুধুমাত্র শৈলকুপা, কোটচাঁদপুর ও কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাদের সরকারিভাবে গাড়ি সুবিধা দেওয়া হলেও অন্যান্য মেডিক্যাল অফিসার ও বিশেষজ্ঞদের গাড়ির সুবিধা নেই। কেউবা ব্যক্তিগত গাড়ি আবার কেউবা রিকশা, মোটরসাইকেল বা ইজিবাইকে করে হাসপাতালে আসছেন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা মিতা নামে এক রোগীর অভিভাবক আব্দুল গাফফার বলেন, হাসপাতালের সেবার মান ভালো। আগে হাসপাতালে অনেক অপারেশন হতো। যা সারাদেশের মধ্যে মডেল ছিল। কিন্তু করোনাকালে চিকিৎসক কম থাকায় সেই সেবা কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. অপূর্ব কুমার সাহা বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে শিশু হাসপাতালটি করোনা হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়েছে। বর্তমানে সদর হাসপাতালটি নন কোভিড ও শিশু হাসপাতালটি কোভিড-১৯ হাসপাতাল করা হয়েছে। হাসপাতাল চালু করার কারণে চিকিৎসক সংকট দেখা দিয়েছে। নার্স, আয়া, ঝাড়ুদার ও সুইপার সেভাবে না থাকায় কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে।

ডাক্তারদের অনুপস্থিতিতে আয়া বা ওয়ার্ডবয় চিকিৎসা দিচ্ছে কী না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের চিকিৎসা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ওষুধ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি বলেন, সততার সঙ্গে হাসপাতালে কর্মরতরা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এখানে ওষুধ বাণিজ্যের প্রশ্নই ওঠে না।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, ঝিনাইদহের স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত করতে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মরতরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ১১ চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ৪১ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরও তাদের মনোবল ধরে রাখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

করোনা রোগীদের বিষয়ে তিনি বলেন, কোভিড ১৯ হাসপাতালে বর্তমানে ২৫ জন ভর্তি রয়েছেন। অন্যরা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। কোনো রোগী হাসপাতালে ভর্তি হতে চাইলে আমরা ভর্তি করছি। কোনো অবহেলা বা ভোগান্তি নেই।

এছাড়াও শৈলকুপা, হরিণাকুণ্ডু, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ ও মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button