জানা-অজানাটপ লিডহরিনাকুন্ডু

ঝিনাইদহে বিলীন হতে চলেছে কৃষিজমি

ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহ জুড়ে অবৈধভাবে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইচ্ছামতো চলছে জমির শ্রেণি পরিবর্তন। ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্যে ফসলি জমি দিন দিন বিলীন হতে চলেছে। অথচ এসিল্যান্ড অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস জমির শ্রেণি পরিবর্তন রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী কৃষকদের।

সরজমিনে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু, শৈলকুপা ও কোটচাঁদপুর ও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধানি, বাস্তু, বাগান, বিল ও ডোবা জমিতে বড় বড় পুকুর খনন করে জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে দেখা গেছে। যে কারণে কৃষক দিনে দিনে হারাতে বসেছে তাদের ফসলি জমি। এ ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পুকুর খনন বন্ধ করা গেলেও অদৃশ্য কারণে তা করা হচ্ছে না।

এলাকাবাসী অভিযোগ দিলে এসিল্যান্ড অফিস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা এসে সাময়িকভাবে পুকুর খনন বন্ধ রাখেন। কিছুদিন পরেই অফিস কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে আবার পুরোদমে চলতে থাকে পুকুর খননের মচ্ছব। এদিকে আইনের তোয়াক্কা না করে মাছচাষিরা উচ্চমূল্যে কৃষকের ধানি জমি ইজারা নিয়ে হরিণাকুণ্ডুু উপজেলার চাঁদপুর, শাঁখারীদহ, ভালকী, পায়রাডাঙ্গা, কাপাসাটিয়া, সাহেবনগর, গাড়াবাড়িয়া, শ্রীফলতলা ও পারমথুরাপুর গ্রামে ফসলি জমির মাঠে খনন করা হয়েছে অর্ধশতাধিক গভীর পুকুর।

যে কারণে ভূমিধসের আশঙ্কাই দিন কাটছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর। গত এক মাস ধরে জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পারমথুরাপুর গ্রামের মৃত হয়বাত বিশ্বাসের ছেলে জাহাঙ্গীর তিন বিঘা জমির ওপর খনন করেছেন বিশাল গভীর পুকুর। অভিযোগ উঠেছে-ফসলি জমির টপসয়েল বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। ফসলি জমিতে পুকুর কাটা বা কোনো কল-কারখানা নির্মাণ করা যাবে না এমন আইনি নির্দেশনা থাকলেও এক্ষেত্রে তা তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। পুকুর সংলগ্ন বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন, মুনতাজ আলী, বাছের আলী, আশাদুল ও আব্দুল বারী জানান, ক্ষমতার জোরে জাহাঙ্গীর হোসেন তার ভেকু মেশিন দিয়ে শত শত ট্রাক মাটি কেটে বিক্রি করে দিচ্ছেন। আমরা নিষেধ করলেও সে তার ক্ষমতার জোরে মাটি কেটেই চলেছে। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন ঝিনাইদহ জজ আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বেঞ্চসহকারী হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, সদ্য খনন করা ওই পুকুরের সঙ্গে আমার কয়েক বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণ হলে সব ধানি জমি ধসে পুকুরে বিলীন হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে ৮নং চাঁদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ভুক্তভোগী কোনো কৃষক আমার পরিষদে অভিযোগ করলে আমি অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। হরিণাকুণ্ডুু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাফিজা সুলতানা বলেন, ফসলের মাঠে পুকুর খনন করতে হলে অবশ্যই জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হবে। অবৈধভাবে পুকুর কেটে মাটি বিক্রি করা আইনত অপরাধ।

এ বিষয়ে তিনি এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকদের আদালতে নিয়মিত মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন। অভিযুক্ত ভূমিদস্যু জাহাঙ্গীর হোসেন এবং তার ছেলে আব্দুল কুদ্দুসের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button