অন্যান্য

স্মার্টফোন : আপনার আসক্তির কারণে বড় ক্ষতি হচ্ছে সন্তানের!

ঝিনাইদহের চোখ ডেস্ক: শিশুরা যা দেখে, যা শোনে তাই তারা করে। তাদের ব্যবহার আয়নার মতো, এতে ফুটে ওঠে তাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের চেহারা। আর ঠিক এই কারণেই সন্তানদের সঙ্গে মা-বাবার সময় কাটানোটা খুবই প্রয়োজন। যদিও বর্তমানে সেই সময়টা আধাআধি ভাগ হয়ে গেছে সন্তান এবং মোবাইল ফোনের মধ্যে।

অনেক মা-বাবাই সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর ফাঁকে হারিয়ে যাচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়ার জগতে। সম্প্রতি, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এতেই শিশুদের মনে জন্ম নিচ্ছে একাকীত্ব, গুরুত্ব না পাওয়ার যন্ত্রণা এবং ক্ষোভ। ফলে মারাত্মক পরিবর্তন ঘটছে শিশুদের ব্যবহারে। ছোটবড় যে কোনও বিষয়ে এরা হয় অতি আবেগপ্রবণ হয়ে উঠছে অথবা কোনও পরোয়াই করছে না। একই সঙ্গে বদমেজাজি, খিটখিটে এবং ঘ্যানঘ্যানে স্বভাবের হয়ে উঠছে।

আমেরিকার ইলিনয়িস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-অধ্যাপক এবং সমীক্ষার লেখক, ব্র্যান্ডন টি ম্যাক ড্যানিয়েল জানিয়েছেন, “অতিরিক্ত ডিজিটাল টেকনোলজির ব্যবহার কিভাবে অভিভাবক এবং সন্তানের মধ্যে সম্পর্ককে ব্যাহত করছে, সেটিই হল আমাদের সন্ধান বা গবেষণার বিষয়”।

তিনি আরও জানান যে, যখন মা বা বাবা শিশুদের সঙ্গে কথা বলার মাঝেই মোবাইলে মনোনিবেশ করেন, তখন শিশুদের সঙ্গে কথাবার্তায় তা বিঘ্ন ঘটায় এবং শিশু ও মা বাবার মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়।

সি. এস. মট হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞ জেনি র‍্যাডেস্কি-এর মতে, “একইসঙ্গে শিশুদের সঙ্গে কথা বলে বা সময় কাটিয়ে মানসিক আদান প্রদান এবং ল্যাপটপ বা ফোনে জরুরি কাজ করা একেবারেই সম্ভব নয়। কারণ, এতে কোনও কাজেই ভাল ভাবে মনোনিবেশ করা যায় না”।

‘চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট’ নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটি তৈরি করতে ১৭০টি পরিবারের অভিভাবকদের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। সেখানে ৪৮ শতাংশ মা-বাবা জানিয়েছেন যে, শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানোর মাঝে দিনে তিনবার বা তাঁর বেশি সময় ফোন বা অন্যান্য ডিভাইসের দ্বারা তারা বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।

২৪ শতাংশ মা বাবা জানিয়েছেন, এই ধরনের সমস্যা দুদিনে একবার ঘটেছে। আর ১১ শতাংশ অভিভাবক জানিয়েছেন যে, শিশুদের সঙ্গে কথোপকথনে এইরকম কোনও বাধার সম্মুখীন তারা হননি। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রত্যেক মানুষেরই নির্দিষ্ট কিছু দিন এবং সময় রাখা উচিৎ, যাতে তারা পরিবারের সঙ্গে বিশেষ করে সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। সবথেকে ভালো হয় যদি খাওয়ার টেবিলে বসে অথবা অফিস থেকে ফিরে শিশুদের সঙ্গে সময় কাটানো যায়। এর ফলে সন্তান যেমন তার মা বাবার সঙ্গে একাত্ম অনুভব করবে, তেমনি তাদের মানসিক এবং পারিবারিক বন্ধনও দৃঢ় হবে।

আমেরিকার ইলিনয়িস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-অধ্যাপক ম্যাক ড্যানিয়েল এর বক্তব্য, “অভিভাবক দের স্মার্টফোন এবং অন্যান্য টেকনোলজি ব্যবহারে কিছুটা লাগাম দেওয়া উচিত যাতে সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটানোতে কোনও বাধা না আসে”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button