কালীগঞ্জটপ লিড

ঝিনাইদহে মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন এসআই

#হাবিব ওসমান, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহে মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফেঁসে যাচ্ছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।

সেই মাকে মুক্ত করতে মেয়ে তার নিজের গহনা বন্ধক রেখে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন কালীগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই দেলোয়ারকে। কিন্তু পুলিশ ওই টাকা নিয়েও ১৩ মাসের দুধের শিশুকন্যাসহ চায়না খাতুনকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। এখন তার মা চায়না বেগম ও শিশু বোন কারাগারে দিন কাটাচ্ছে এমনই অভিযোগ করেছেন বড় মেয়ে ছালমা।

কালীগঞ্জ শহরের ব্রিকফিল্ড এলাকার বাসিন্দা আটক চায়নার স্বামী আব্দুস ছালাম জানান, রোববার সকাল ৬টার দিকে ঘুম থেকে ওঠে বাড়ির কাজ শেষে গরু বাঁধতে যাচ্ছিলেন। এ সময় প্রতিবেশী সেলিমের ছেলে ঈমনসহ ১০-১২ জন যুবক তার বাড়িতে আসে। তারা বাড়ি সংলগ্ন প্রতিবেশী শিল্পী খাতুনের চালের ওপরে চার বোতল ফেনসিডিল পায়। ওই ফেনসিডিল চায়না বেগমের দাবি করে যুবকরা তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে তাকে পুলিশে দেয়।
তিনি বলেন, এ খবর পেয়ে সকালেই চায়নার মেয়ে চাপালী গ্রামের সাজুর স্ত্রী ছালমা তার মাকে দেখতে থানায় যায়। এ সময় থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন মেয়ে ছালমাকে জানান- মাকে মুক্ত করতে হলে ৫০ হাজার টাকা লাগবে। তাকে ছেড়ে দিতে শেষ পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার চুক্তি হয়।

এদিকে দিনমজুর চা দোকানি বাবা আব্দুস ছালামের পক্ষে ওই টাকা দেয়া সম্ভব না হওয়ায় বিপাকে পড়েন মেয়ে ছালমা।

এরপর বাধ্য হয়েই তার গলার দুটি স্বর্ণের চেইন ও দুটি কানের দুল বাজারের একটি জুয়েলারিতে ৩০ হাজার টাকায় বন্ধক রাখেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছালমা থানাতে গিয়ে এসআই দেলোয়ার হোসেনকে ওই টাকা দেন। টাকা নিয়ে পুলিশ আটক চায়নাকে দুপুরের পর ছেড়ে দেবে বলে জানায়।

এরপর দুপুরে না ছেড়ে রাতে ছাড়বে বলে জানায়। কিন্তু পুলিশ তাকে না ছেড়ে পরদিন সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে আটক চায়নার কোলে থাকা ১৩ মাসের দুধের শিশুসহ তাকে জেলহাজতে পাঠায়।

এ বিষয়ে থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন আসামি ছাড়তে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, চায়না একজন মাদক ব্যবসায়ী। জনতা তাকে মাদকসহ থানায় সোপর্দ করায় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলী জানান, এসআই দেলোয়ার কর্তৃক আসামির পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। তবে ঘটনাটি সত্য হলে তিনি ওই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমার নজরে আসেনি। তবে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button