জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখামহেশপুর

ঝিনাইদহে গরু ডে কেয়ার খামার

মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহের মহেশপুরে গরু ডে কেয়ার খামার গড়ে উঠেছে। এ খামারে নিরাপদে এবং নির্বিঘ্নে একটি গরু সারাদিন রাখা এবং প্রতিপালনের জন্য গরুর মালিককে খামারিকে দিতে হবে মাত্র ১৫ টাকা।

শহর জীবনে কর্মব্যস্ততায় বাবা মায়ের সন্তানদের জন্য যেমন ডে কেয়ারের ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে, তেমনি গ্রাম বাংলায় গরুর জন্য এ ডে কেয়র খামারের চাহিদাও দিন দিন বাড়ছে।

খামারিরা প্রতিদিন ছুটে যান গরুর মালিকদের বাড়িতে। নিজেদের দায়িত্বে বুঝে নিয়ে আসেন গরু। সারাদিন মাঠে চরানোর পর সন্ধার আগে আবার গরুর মালিকদেও বাড়িতে পৌছেদেন তারা। আর এ কাজের জন্য গরুর মালিককে প্রতিদিন দিতে হয় ১৫ টাকা। এভাবেই দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর চলছে ঝিনাইদহের মহেপুরের আলাউদ্দিনের। আলাউদ্দিন উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের ভোরবা গ্রামের রবিউল ইসলাম বিশ্বাসের ছেলে।

প্রথমে দ্বিধা থাকলেও এটাকে এখন পেশা হিসাবেই নিয়েছেন তিনি। তার এমন কাজে গরুর মালিকেরাও বেজায় খুশি।

আলাউদ্দিন জানান, প্রথমে কাজে দ্বিধা থাকলে গরুর মালিকদের আগ্রহের কারনে এক পর্যায়ে এই পেশায়তেই সিন্ধান্ত নিই। দিনদিন গরুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। আয়ও বাড়ে। বর্তমানে প্রতিদিন ৯০/৯৫ টি গরু চরাতে হয়। এখন তৈফিক ও তুফান নামের দুই জন সহযোগি রয়েছে তার। তৈফিক লেখাপড়া করলেও তুফান করেনা।

তৈফিক জানান, তারা গরিব মানুষ। যে টাকা পায় তা সংসারে দিয়। সে গ্রামের ব্র্যাক স্কুলের ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ে। সকালে স্কুলে যায়, বাড়িতে এসে আবার মাঠে গরু খাওয়াতে যায়। সে চার বছর এ কাজ করছে।

সে আরো জানান, লেখাপড়া খুবই ভালো লাগে তার। কোনদিন স্কুল কামাই করেনা। স্যারেরা যে পড়া দেয়, একাই বাড়িতে পড়া করে। তার ইচ্ছা আছে, কষ্ট করে হলেও লেখাপড়া করে, বড় হবে। একদিন চাকরি করবে।

আব্দুর রশিদ, একজন গরুর মালিক। তিনি জানান, মাত্র ১৫ টাকার বিনিময়ে প্রতিদিন সকাল, বিকালে গরুকে মাঠের কাঁচা ঘাস খাওয়াতে পারছি। তাড়াছা তাদের দায়িত ¡দেখে, আমরা বড়ই খুশি হই। তারা আমাদেও মত গরুর মালিকদের বড়ই উপকারে আসছে।

এ বিষয়ে গ্রামের মেম্বর শাহাজাহান আলি জানান, আলাউদ্দিন বড়ই ভালো ছেলে। তার দায়িত্ব দেখে আমারা বড়ই খুশি হই। আমারও দুইটি গরু তার কাছে দিয়ে থাকি। তার এমন কাজের কারনে আমাদেও মত গরুর মালিকদেও গরু পালন করা আগ্রহ বেড়ে গেছে। তিনি আরো জানান, তার সাথে কেই সপ্তাহে বা ১৫ দিন পর, আবার কেউ মাসিক চুক্তিতে টাকা পরিশোধ করে থাকে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button