জানা-অজানাটপ লিড

যশোর-ঝিনাইদহ বাজারে নিম্নমানের প্রসাধনীতে সয়লাব

ঝিনাইদহের চোখঃ

যশোর-ঝিনাইদহ দোকানগুলোতে ত্বক ফর্সাকারী প্রসাধনীতে ভরপুর। তবে এসব প্রসাধনীর কোনটা আসল, কোনটা নকল তা চেনার উপায় নেই। আর মান নিয়ে তো প্রশ্ন আছেই। স্বল্পসময়ে ‘সুন্দরী’ হওয়ার বাসনায় রাতারাতি ত্বকের পরিবর্তন করার তাড়নায় নারীরা এসব প্রসাধনী ব্যবহার করে শুধু ঠকছেনই না, ত্বকের ক্ষতিও করছেন। তবে এ বিষয়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা একে অপরকে দায়ী করেছেন।

এমএম কলেজের ছাত্রী শারমিন সুলতানা নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘আমি এক দোকান থেকে ক্রিম কেনার সময় তারা গ্যারান্টি দিয়েছিল মুখের রং উজ্জ্বল হবে। কিন্তু মুখে ক্রিম লাগানোর পরে ব্রণ ওঠেছে। ত্বকেও বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

মণিরামপুরের বাসিন্দা শহরের খড়কী এলাকার এক মেসের ছাত্রী মুনিয়া খাতুন জানান, আরেক প্রতারণার কথা। তিনি কসমেটিক্সের দোকান থেকে তেল কিনে ঠকেছেন। দোকানদার তার তেলের বোতল প্যাকিং করে দিয়েছিলেন। বাড়ি এসে দেখেন মেয়াদ উত্তীর্ণ।

ঝিনাইদহের বারোবাজারের বাসিন্দা এমএম কলেজে অনার্সের ছাত্রী সুমাইয়া নিদ্রা জানান, বিদেশি এক ক্রিম দেখে আগ্রহ নিয়ে কিনেছিলাম মেদ কমানোর জন্য। দোকানদার বলছিল, তিন মাসের মধ্যে স্লিম হওয়া যাবে, না হলে পণ্য ফেরত নেবে। কিন্তু কাজতো হয়নি। পরে জেনেছি সেটা দেশি পণ্য।

এদিকে বিদেশি বলে দেশি পণ্য বিক্রি করেন অনেক দোকানদার। এ বিষয়ে এক দোকানদার বলেন, দেশি পণ্য বিভিন্ন কোম্পানি দিয়ে যায়, বাইরেরগুলো ব্লাকের (চোরাইভাবে) মাধ্যমে কেনা হয়। পণ্যের প্যাকেটের গায়ে উৎপাদিত দেশের নাম লেখা থাকে। ক্রেতা যদি না দেখেন; এর দায়তো দোকানদারের না।

ব্যবসায়ী ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা জেনেবুঝে খারাপ পণ্য ক্রেতাদের কেন দিব? বরং বিভিন্ন পার্লারে, মেলায় কম দামে নিম্নমানের ও মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রসাধনী সামগ্রী বিক্রি হয়। ক্রেতারা অনেক সময় একটার সাথে আরেকটা ফ্রি পাওয়ার জন্য সেগুলো ক্রয় করেন। ফলে ত্বকে সমস্যা হলে দোষ দেয় আমাদের।’

অন্যদিকে, দেশি নাকি বিদেশি কোন পণ্যের চাহিদা বেশি এ বিষয়ে এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা দেশি-বিদেশি সব পণ্যই আনি। যে কাস্টমার যেমন চায় তেমন বিক্রি করি। মানের প্রশ্নে বললেন, অবশ্যই বিদেশি জিনিসের মান ভাল। একই জিনিস দেশে তৈরি করা হলেও মান সমান হয় না।

জানতে চাইলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর যশোরের সহকারী পরিচালক ওয়ালিদ বিন হাবিব বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত প্রসাধনীর কারখানা রাজধানী ও তার আশপাশে। যদি জানা যায় যশোরে উৎপাদন করা হচ্ছে তবে আমরা তদারকি করতে পারি। তবে আমরা মাঝে মধ্যে বাজারগুলোতে অভিযান পরিচালনা করি। অনুমোদন ছাড়া পণ্য পেলে জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি সচেতনতামূলক কাজ করি।’

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button