পাঠকের কথা

“প্রিয় গ্রাম, আমি তোমায় ভালবাসি” —গুলজার হোসেন গরিব

ঝিনাইদহের চোখঃ

শহর এসেছিলো গ্রামে, দেখতে
গ্রামীনতা, সোঁদামাটি, শস্য মাঠের বিশালতা
পাকা ধানের সোনালি রূপ, চাষীদের জিড়োন
আলে বসে ভাত খাওয়া, রাখালের বাবলা তলা।

দেখতে এসেছিলো,
ঘাস ফুলের মৌ মৌ উচ্ছ্বাস, গাছের ডালে মৌচাক
পিপড়ার সাড়াশি দাঁত, উই ঢিবি, পাখি আর নালসের বাসা।
কাদাজলে জেলেদের মাছধরা, গাছির গাছ কাটা।
শুকনো পাতার বারুদাগুনে কৃষাণীর ধান সেদ্ধ করা
রস জ্বালিয়ে গুড় বানানো,
কৃষিযন্ত্রাদি মাটির উঠোন আর মাটির চুলা।

দেখতে এসেছিলো
শকুনদের মাংসোৎসবের ভাগাড়, শেয়ালের গর্ত
কাঠবিড়ালির পেয়ারা খাওয়া, ইদুরের ধান চুরি।
ভূতুড়ে শেওড়াগাছ! বিৎঘুটে ঘনো অন্ধকার!
কাঠ ও ফল গাছের পাতার ফাকে রূপোলী চাঁদ
মন লুটে নেয়া জোনাকির আলো।

দেখতে এসেছিলো
রাস্তার দু’ধারে ভাটিফুল, পলাশ বন, লাউ গাছের মাচাল
টিনের চালে সিম লতার ফুল, হাঁস-মুরগি, কবুতর ঘর
বাছুর গরুর আমুদে লম্ফ-ঝম্প।

শুনতে এসেছিলো
ফড়িং প্রজাপরি ডানার গান, মৌমাছির মধুগীতি
ব্যাঙের বর্ষাসঙ্গীত, শেয়ালের ডাক, দোয়েলের শীষ,
কোকিলের আহ্বান, ঝিঝির রাগ আবহ
বেগবতীরর কলকলানি, ঘুমভাঙা পাখির কিচিরমিচির
পাখিদের কবিতা আবৃত্তি, টুনটুনির স্মৃতিচারণ।

শহর এসেছিলো, ভালোবাসতে
ঘাসের আল, দুব্বোর রাস্তা, পাকা ধান, ফসলি মাটি।
ঘর ঘেঁষা দু’পায়ে হাঁটা পথ, বাঁশের ঝাঁড়, নদীর কূল
হিজল, কদম, বেতবাগান, ঝোঁপ, মাতৃছায়া বটবৃক্ষ।
গ্রামের অমিশ্রণতা, সাধারণ প্রকৃত মানুষ
আর সমস্ত শহরের ক্ষুধা মেটানো কৃষিখ্যাত।

এসেছিলেন শ্রেয় সর্বজনপ্রিয় কর্তা
মহাযজ্ঞে ভালোবাসার খেলা খেলতে
হেরে গিয়ে জয়ী হয়েছিলেন
বলেছিলেন “প্রিয় গ্রাম, আমি তোমায় ভালবাসি”।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button