জানা-অজানাঝিনাইদহ সদরটপ লিড

ঝিনাইদহে ভুঁইফোড় কোম্পানীর ভুট্টা বীজে ঠকছে কৃষক

মনজুর আলম, ঝিনাইদহের চোখঃ

ঝিনাইদহে চাষিরা ভুট্টা লাগাতে শুরু করেছে। জেলার উপজেলার বাজার গুলোতে বাহারি রঙের ভুট্টার বীজে ছয়লাব হয়ে গেছে।

দোকানীরা রীতিমত বিভিন্ন জাতের ভুট্টা বীজের পসরা সাজিয়ে বসেছে। নিজ নিজ কোম্পানি কর্মিদের চটকদারি কথা, প্রতিশ্রæতিতে চাষিরা বীজ কিনতে সিন্ধান্ত হীনতায় ভুগছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভুট্টা মুলত মেক্সিকান ফসল। বাংলাদেশে ভুট্টার প্রতিটি জাত-ই হাইব্রিড। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে কম্পোজিট জাতের বীজ দিয়ে ভুট্টা আবাদ শুরু করা হয়। সে সময় মুক্ত পরাগায়ন করে ইনব্রিড লাইনে বীজ তৈরি করে আবাদে ব্যবহার করা হত। তখন ভুট্টা আবাদ চাষিদের আকর্ষন করতে পারেনি। কিন্তু ১৯৮৬-৮৭ সালে তিনটি বিদেশি হাইব্রিড জাত দিয়ে আবাদ করা হয়। ১৯৯২-৯৩ সন থেকে ভুট্টার আবাদ বাড়তে থাকে। ২০০২-০৩ সালে ভুট্টা আবাদে চাষিদের আকর্ষন করতে শুরু করে।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৭’হাজার ৪২০ হেক্টর জমিতে চাষিরা ভুট্টার আবাদ করেছিল। কয়েক মরসুমে চাষিরা ভুট্টা আবাদে লাভোবান হচ্ছে। যে কারনে এবছর ভুট্টা আবাদ আরো বাড়াতে পারে বলে কৃষি বিভাগ ধারনা করছে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মামুনশিয়া গ্রামের ভুট্টা চাষি মশিয়ার রহমান বলেন, বিঘাপ্রতি জমিতে ভুট্টার আবাদ করতে খরচ হবে ১০/১২ হাজার টাকা। আর লিজ নেয়্ াজমি হলে খরচ হবে প্রায় ১৫/১৬ হাজার টাকা। সাধারন ফলন হলে ৪০-৪২ মন হবে। যা বিক্রি করে ৩০-৩২ হাজার টাকা পাওয়া যাবে। খরচের তুলনায় লাভ বেশি বলে আবাদ বাড়ছে। তাছাড়া বিক্রিতে কোন প্রকার ঝামেলা নেই।

তিনি আরও বলেন, বাজারে এসেছি ভুট্টা বিজ কনিতে। কিন্তু দোকানে সাজানো বাহারি প্যাকেট আর প্যাকেটে যেভাবে ভুট্টার ছবি, কোম্পানিও দোকানিদের কথায় কোন জাতের বিজ কিনবো বুঝতে পারছিনা।

উপজেলার বাজার গোপালপুরের বীজ ব্যবসায়ি আব্দুস সালাম বলেন, এবছর উত্তরন সুপার, মিরাকেল, পিনাকেল, এলিট, ৯৮১,৯৮৭,৭৭২০, ৩৩৫৫ সহ বাজারে ১৫-১৬ প্রজার জাতের ভুট্টার বিজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে। তবে তিনি কয়েকটি কোম্পানির বিজ বিক্রি করছেন।

ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ বলেন, ভুট্টা আবাদে অল্প খরচে লাভ বেশি, বিক্রিতেও ঝামেলা কম, বাজার চাহিদা ভাল, তাই প্রতি বছরই ভুট্টা আবাদের দিকে কৃষকরা ঝুকছে। তিনি আরো বলেন, বীজ শতভাগ হাইব্রীড এবং বিদেশিদের উপর নির্ভর করতে হয়। বীজটা যদি দেশে তৈরি করা হত, তাহলে আবাদের ভবিষ্যত খুবই ভালো হত।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button