জানা-অজানাটপ লিডদেখা-অদেখামহেশপুর

বীরশ্রেষ্ট হামিদুরের ৪৮ তম শাহাদত বার্ষিকী (ভিডিও সহ)

খাইরুল ইসলাম নিরব, ঝিনাইদহের চোখঃ

আজ ২৮ অক্টোবর। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী।

১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই সীমান্তে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন তিনি।

ঝিনাইদহ জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত হামিদুর রহমানের গ্রাম মহেশপুর উপজেলার খর্দ্দখালিশপুর। এ গ্রামের রীর সন্তান হামিদুর রহমান। মহান মুক্তি যুদ্ধ শুরু হলে হামিদুর রহমান মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।

মৌলভীবাজার জেলার ধলাইতে ছিল পাক বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি। কৌশলগত দিকে দিয়ে এ ঘাঁটি দখল জরুরি হয়ে পড়ে মুক্তি বাহিনীর জন্য। মুক্তি বাহিনী পাক সেনা ঘাটি আক্রমান করে দখল করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ২৮ অক্টোবর ধলাই পাক সেনা ঘাঁটি আক্রমন করে মুক্তি বাহিনী। তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। দুটি মেশিন গান পোষ্ট থেকে তুমুল গুলি বর্ষণ করতে থাকে পাকসেনারা। মেশিনগান পোষ্ট ধ্বংসের দায়িত্ব পড়ে হামিদুর রহমানের উপর। এ বীর এগিয়ে যান। ধ্বংস করেন মেশিনগান পোষ্ট। মুক্তি বাহিনীর দখলে আসে পাক সেনাঘাঁটি। শত্রæর গুলিতে তিনি শাহাদাৎ বরণ করেন। তার সহযোদ্ধাগণ মরদেহ ভারতে নিয়ে ত্রিপুরার আমবাশা এলাকায় সমাহিত করেন। দেশ স্বাধীনের পর বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব দেয় হামিদুর রহমানকে। ২০০৭ সালে এ বীরের দেহাবশেষ ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়েছে।

তার নামে খালিশপুরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সরকারি কলেজ, লাইব্রেরী ও জাদুঘর এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় । গ্রামে দেড় কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে ৮ শতক জমি কেনা হয়। তারা এ জমি সরকারকে দান করেছেন। গ্রামবাসির দাবি এ জমিতে হামিদুর রহমানের নামে একটি হাসপাতাল নির্মানের। খর্দ্দ খালিশপুর গ্রামের নাম বদল করে হামিদনগর করার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে না। মানুষ খর্দ্দ খালিশপুর বলে জানে। বীর শ্রেষ্ঠের গ্রামবাসির এ সরকারের কাছে প্রত্যাশা অনেক। বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ হামিদুর রহমানের ভাইপো হাফিজুর রহমান সরকারি শাহাদাৎ কাষিকী পালনের দাবি জানান।

সরকার বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের মায়ের জন্য বসতবাড়ি তৈরি করে দেয়। পরিবারের জন্য আরেকটি দোতলা বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বীর শ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান যাদুঘর ও লাইব্রেরীর সামনে একটি ইকোপার্ক নির্মানের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু এটি বাস্তবায়ন হয়নি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button